অপরাধীর ঘরবাড়ি গুড়িয়ে দেয়া নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভারতের জনগণের বিবাদ শেষ পর্যন্ত গড়ালো দেশটির সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত। বুধবার (১৩ নভেম্বর) ‘বুলডোজার নীতি’ নিয়ে রায় দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।

কোনো ব্যক্তি অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত বা দোষী সাব্যস্ত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে বুলডোজার দিয়ে তার বাড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মামলা দায়ের হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। বুধবার সেই মামলাতেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিলেন, এখন থেকে ঘরবাড়ি ও অন্য ‘অবৈধ’ কাঠামো ভাঙতে গেলেও তা করতে হবে নির্দিষ্ট নিয়মবিধি মেনেই। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

বুধবার সুপ্রিম কোর্টে বুলডোজার মামলার রায় শোনায় বিচারপতি বিআর গভই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ। বুধবার বিচারপতি গভই বলেন, আমরা বাসস্থানের অধিকারের দিকটি গুরুত্ব সহকারে দেখেছি। সংবিধানের ১৯ এবং ২১তম অনুচ্ছেদেও এর উল্লেখ রয়েছে। বাসস্থানের অধিকার একটি মৌলিক অধিকার। এই ধরনের অধিকার থেকে নিরপরাধ মানুষকে বঞ্চিত করা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক।

আরো পড়ুন : দোকানে ঢুকে তৃণমূল নেতাকে গুলি করে হত্যা

বিচারপতির মতে, যখন কোনো নির্দিষ্ট বাড়ি কিংবা কাঠামো হঠাৎ করে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, অথচ অন্য কাঠামোগুলোকে রেয়াত করা হয়- তখন ধরে নেয়া যেতে পারে যে এই কাজটি বেআইনি নির্মাণে বাধা দিতে নয় বরং আইনের ঊর্ধ্বে উঠে কোনো ব্যক্তিবিশেষকে শাস্তি দেয়ার জন্যই করা হয়েছে। 

গভই বলেন, এই ভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার মেনে নেয়া যায় না। কোনো ব্যক্তি বিচার করতে পারেন না, কে দোষী আর কে দোষী নয়। কেউ এভাবে আইন হাতে তুলে নিতে পারেন না।

এর পরেই দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, আগে থেকে শোকজ় নোটিস ছাড়া কোনো কাঠামো ভেঙে ফেলা যাবে না। নোটিশ পাঠানোর পর ১৫ দিন সময় দেয়া হবে। তার পর বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হবে। জেলা প্রশাসকের নিয়োগ করা অফিসারের তত্ত্বাবধানে ভাঙার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে। এ বিযয়ে সংবিধানের ১৪২ ধারা অনুযায়ী নির্দেশিকাও জারি করেছে শীর্ষ আদালত।

‘বুলডোজার নীতি’ নিয়ে আগেও প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই মামলায় গত ১ অক্টোবর অন্তর্বতী আদেশের মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়ে বিচারপতি গভই এবং বিচারপতি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কোনো বাড়ি কিংবা দোকান বুলডোজা দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া যাবে না।