ঈদে মিলাদুন্নবী: বশেমুরবিপ্রবিপিতে সভা ও মাহফিল

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুর (বশেমুরবিপ্রবিপি)-এ আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পিরোজপুরস্থ প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবন, কর্ম ও শিক্ষা এবং ইসলামে শান্তি, প্রগতি, সৌহার্দ্য, সহিষ্ণুতা, বিশ্ব-ভাতৃত্ব, মানবাধিকার ও নারীর মর্যাদা শীর্ষক এই সভা ও মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন ভার্চুয়ালি এ আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে অংশ নেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য মানবজাতির জন্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর অবদান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) মানবজাতির জন্য একটি বিশেষ দিন। মহান আল্লাহ মহানবীকে পাঠিয়েছিলেন বলেই আমরা মুক্তি ও শান্তির পথ পেয়েছি। তিনি মানবজাতির জন্য সবচেয়ে আদর্শবান মানুষ। আমরা যেন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মহানবীকে ধারণ করতে পারি, তাকে অনুসরণ করে জীবন গড়তে পারি- মহান আল্লাহর কাছে সেটাই আমাদের চাওয়া।
প্রখ্যাত এ মনোবিজ্ঞানী তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, মহানবীর জীবনকে আমি বলবো একটি ‘টু ডাইমেনশনাল’ বিষয়। একটি হচ্ছে ইহকালের সৎ পথে চলা, মানুষের সেবা করা, হক আদায় করা এবং মহানবীর অন্যান্য মানবিক গুণাবলি অনুসরণ করা। আরেকটি হচ্ছে পরকাল, যেটি আমরা এখনও কেউ দেখিনি। তবে পরকালে আমরা যেন শান্তিতে থাকতে পারি, সেই পথগুলো মহানবী আমাদের বলে দিয়েছেন। মহানবী তাঁর মুখ থেকে যেসব আমল বলে গেছেন, যেভাবে চলাফেরা করেছেন সেসব হাদিসের মাধ্যমে আমাদের কাছে এসেছে। আমরা যদি সেগুলো সঠিকভাবে চর্চা করতে পারি এবং বিচ্যুত না হই, তাহলে আমরা পরকালেও শান্তি পাবো।
গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, নবী করিম (সা.) তার পুরো জীবন ইসলাম ধর্মের খেদমতে অতিবাহিত করেছেন। তিনি আমাদের সঠিক পথে চলার দিকনির্দেশনা প্রদান করে গেছেন। মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা অনুসরণ করে আমরা যেন নিজেদের জীবনকে আলোকিত করতে পারি সেই চেষ্টা করে যেতে হবে।
পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব ড. মো. মুছা খান বলেন, মহানবীর জীবনের শুরু আছে। কিন্তু কোনো শেষ নেই। ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করার পর থেকে তাঁর আদর্শ, জীবন দর্শন অনন্তকাল ধরে সমগ্র মুসলিম জাতির জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। একজন আদর্শ মানুষের সকল গুণাবলি তাঁর মধ্যে ছিল। পরকালে মুক্তি পেতে ইহকালে মহানবীকে অনুসরণ ও অনুকরণের কোনো বিকল্প নেই।
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আকতার হোসেন ইসলামের প্রচার ও প্রসারে মহানবী (সা.)-এর গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে মহানবীকে অনুসরণ করতে হবে। তাহলেই পরকালে মুক্তির পথ সহজ হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুর কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব মুফতি মাওলানা যুবায়ের আহমাদ। তিনি মহানবীর জীবন ও আদর্শের ওপর বিশদ আলোচনা করেন।
মাওলানা যুবায়ের বলেন, নারীর অধিকার, শ্রমিকের অধিকার, অমুসলিমের অধিকার, আত্মীয়-স্বজনের হক, প্রতিবেশীর হক এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় মহানবীর গুরুত্ব অপরিসীম। মহান আল্লাহর পর বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাবান ব্যক্তি মহানবী (সা.)। সবচেয়ে বর্বর যুগে আল্লাহ মহানবীকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। নবীজী তার পুরো জীবনে মানুষকে শান্তির পথ দেখিয়েছেন। মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথের সন্ধান দিতেই নবীজী পৃথিবীর বুকে এসেছিলেন। তিনি এমন একজন ব্যক্তি, যার জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপে অনুসরণ করা যায়।
আলোচনার শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট কামরুল ইসলাম কিরণ। এ ছাড়া পরিসংখ্যান বিভাগের প্রভাষক জনাব মাঈন মোল্লা হামদ না’ত পরিবেষণ করেন। আলোচনা শেষে গোটা মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।