একাদশে ভর্তি
জিপিএ-৫ পেয়েও কলেজ পায়নি যত শিক্ষার্থী

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ১১:২৮ এএম

ছবি: সংগৃহীত
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদনের প্রথম ধাপে নির্বাচিতদের ফল প্রকাশ করেছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। এ ধাপে আবেদন করেও ৪৮ হাজার শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তির সুযোগ পাননি। তাদের মধ্যে রয়েছেন জিপিএ-৫ পাওয়া সাড়ে ৮ হাজার শিক্ষার্থী। এছাড়া দেশের ২২০টি কলেজে ভর্তির জন্য একজন শিক্ষার্থীও আবেদন করেননি।
রবিবার (২৩ জুন) রাতে প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সূত্র থেকে জানা যায়, ফলাফলে দেখা গেছে গত ২৬ মে থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত একাদশে ভর্তি হতে অনলাইনে আবেদন করেন ১৩ লাখ ৩৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে পছন্দের কলেজ পেয়েছেন ১২ লাখ ৮৭ হাজার শিক্ষার্থী। বাকি ৪৮ হাজার শিক্ষার্থী প্রথম ধাপে কোনো পছন্দের কলেজ পাননি।
কলেজ না পাওয়াদের মধ্যে জিপিএ-৫ শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ৮ হাজারের বেশি। আর একজন শিক্ষার্থীও পায়নি এমন কলেজের সংখ্যা ২২০টি।
যে কারণে কলেজ পাননি জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা-
ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী- একজন শিক্ষার্থী তার এসএসসির ফলাফল ও অনলাইন আবেদনের সময়ে দেয়া পছন্দক্রমের ভিত্তিতে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হন। এক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী ১০টি কলেজ পছন্দক্রমে দিতে পারেন। অনেকে পছন্দের দুই, তিন বা চারটি কলেজ পছন্দক্রমে দিয়েছেন। মূলত তাদের সেই কলেজগুলোতে আসন শূন্য না থাকায়, তারা ভর্তির সুযোগবঞ্চিত হয়েছেন।
আরো পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমানো হলো গ্রীষ্মের ছুটি
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার এসব কথা জানিয়ে বলেন, শিক্ষার্থীদের নজর ছিলো দেশের ভালো কলেজগুলোর দিকে। তারা হাতেগোনা কয়েকটি কলেজ পছন্দক্রমে দিয়েছেন। যেখানে সবার আকর্ষণ বেশি। এজন্য সেখানে প্রতিযোগিতাও বেশি ছিলো। আর সেসব কলেজে জিপিএ-৫ প্রাপ্তরাই কেবল সুযোগ পান। অনেক সময় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্য থেকে নম্বরের হিসাবে সামনের কয়েকজন সুযোগ পান। আর জিপিএ-৫ পেয়েও নম্বর কম থাকায় অনেকে বাদ পড়েছে।
তিনি আরো বলেন, কলেজ পছন্দের সময় সব ভালো মানের কলেজকে পছন্দ দিয়েছেন যেমন শিক্ষার্থীরা, তেমনি তাদের উচিত ছিলো তার প্রাপ্ত নম্বরের দিকে নজর রেখে কলেজ পছন্দ দেয়া।
কলেজ না পাওয়া শিক্ষার্থীদের বর্তমানে করণীয়-
এক্ষেত্রে প্রথম ধাপে আবেদন করে যারা কলেজ পাননি, তাদের জন্য কী করণীয় তাও জানিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।
তিনি বলেন, এসব শিক্ষার্থীদের আবেদন স্বয়ংক্রিয়ভাবে দ্বিতীয় ধাপে চলে যাবে। এখন শিক্ষার্থীদের শুধু অনলাইন আবেদনে গিয়ে পছন্দক্রমে পরিবর্তন আনতে হবে। পরামর্শ থাকবে, তারা যেনো পছন্দক্রমে নতুন কিছু কলেজ যোগ করেন। তবে কলেজ আসনের কোনো সংকট নেই। সব শিক্ষার্থীই ভর্তি হতে পারবেন।
এদিকে প্রথম ধাপে আবেদন করে কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হওয়া শিক্ষার্থীদের দ্রুত কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। প্রথমেই তাদেরকে ৩৩৫ টাকা ফি পরিশোধ করে প্রাথমিকভাবে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে নিশ্চায়ন ‘ফি’ পরিশোধ করতে কারও অসুবিধা হলে সরাসরি বিকাশের মাধ্যমে নিশ্চায়ন ফি দিয়েও নিশ্চায়ন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন: একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ
কেউ যদি প্রথম ধাপে কাঙ্ক্ষিত কলেজ না পান, সেক্ষেত্রেও তাকে প্রাথমিক নিশ্চায়ন করতে হবে। ২৯ জুন রাত ৮টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক নির্বাচন নিশ্চায়ন করতে পারবেন। এরপর তিনি মাইগ্রেশনের সুযোগ পাবেন। ৪ জুলাই পছন্দক্রম অনুযায়ী প্রথম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে আবেদন ও ফল-
দ্বিতীয় ধাপের আবেদন প্রক্রিয়া ৩০ জুন শুরু হয়ে চলবে ২ জুলাই রাত ৮টা পর্যন্ত। ৪ জুলাই রাত ৮টায় দ্বিতীয় ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে। ৫ থেকে ৮ জুলাই রাত ৮টা পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের নিশ্চায়ন প্রক্রিয়া চলবে। এরপর ১২ জুলাই দ্বিতীয় মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে।
৯-১০ জুলাই তৃতীয় ধাপে আবেদন শুরু হবে। ১২ জুলাই তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ এবং ১৩-১৪ জুলাই তৃতীয় ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের নিশ্চায়ন করতে হবে। তিন ধাপে নির্বাচিত এবং সফলভাবে নিশ্চায়ন করা শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে ১৫ থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত।
আর ভর্তি কার্যক্রম শেষে সারাদেশে একযোগে আগামী ৩০ জুলাই শুরু হবে ক্লাস।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়- সারা দেশে মিশনারি পরিচালিত কলেজগুলোর বাইরে ৭ হাজার ৭৯২টি কলেজে আসন রয়েছে ২৬ লাখ ৪৭ হাজার ১৩৩টি। সেখানে চলতি বছর সব শিক্ষা বোর্ড (সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি) মিলিয়ে এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট অংশগ্রহণকারী ছিলো ২০ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৭ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। সব মিলিয়ে এবার প্রায় ১০ লাখ আসন ফাঁকা থাকবে।