ওএমআর শিট ছেঁড়ার ঘটনায় ডাকা হয়েছে সেই ছোঁয়াকে

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৩৮ পিএম

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় নকল না করলেও ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠা সেই শিক্ষার্থী হুমাইরা ইসলাম ছোঁয়াকে ডেকেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি। এ ঘটনার বিষয়ে তার দেয়া অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত কমিটি সেই সময়ের কথা জানতে তাকে চিঠির মাধ্যমে ডেকেছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে সহকারী পরিচালক (সরকারি মেডিকেল কলেজ) ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই চিঠি হুমায়রা ইসলাম ছোঁয়ার পিতা মো. মাসুদ রানার রাজধানীর খিলক্ষেতের বাসায় পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থী হুমাইরা ইসলাম ছোঁয়ার অভিযোগ তদন্তের জন্য গঠিত কমিটি আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি বেলা ১২টার সময় এ বিষয়ে তদন্ত কাজ পরিচালনা করবে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণসহ যথাসময়ে অধ্যক্ষের কার্যালয়, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, শেরেবাংলা নগর ঢাকা-১২০৭ এ উপস্থিত হয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য আপনাকে অনুরোধ করা হলো।
এর আগে, ১১ ফেব্রুয়ারি বিকালে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের খবরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অভিযোগ জানাতে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী হুমায়রা ইসলাম ও তার পরিবার। এসময় তার স্বজনদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তৈরি হয় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি।
শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের অভিযোগ, ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় এক নারী শিক্ষার্থীর কেন্দ্র ছিল রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র (শেখ কামাল ভবন, অষ্টম তলা)। পরীক্ষায় অসৎ উপায় অবলম্বনের সন্দেহে একজন পর্যবেক্ষক ওই শিক্ষার্থীসহ তিনজনের ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলেন। পরে পর্যবেক্ষক তার ভুল বুঝতে পারেন এবং নতুন ওএমআর শিট দেন। তবে তখন পরীক্ষা শেষ হতে আর মাত্র পাঁচ মিনিট বাকি ছিল। বারবার অনুরোধ করার পরও পরীক্ষা পর্যবেক্ষক তাদের জন্য পরীক্ষার সময় বাড়াননি। ওই সময় অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীর আত্মীয়স্বজনের কথা কাটাকাটি হয়। পরে ওই শিক্ষার্থী স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগপত্র দেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী হুমাইরা বলেন, আমার স্বপ্ন ডাক্তার হওয়ার। আমার স্বপ্নকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তিনি (পর্যবেক্ষক) আমার খাতা ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন। আমি এর বিচার চাই।
সন্তানের স্বপ্ন ভঙ্গের এমন করুণ পরিস্থিতি কোনো ভাবে মেনে নিতে পারেননি হুমায়রার বাবা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, সবাই আমার মেয়ের জীবনটা ভিক্ষা দেন। আমার মেয়ে সেকেন্ড টাইম পরীক্ষার্থী। আমার মেয়ে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে নিয়ে পড়াশোনা করেছে। প্রথমবার সুযোগ না হওয়ায় দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দিয়েছে। কিন্তু আমার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে গেল।
এদিকে, বিষয়টি তদন্তের আশ্বাস দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অভিযোগের সত্যতা মিললে শিক্ষার্থীর জীবন যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ারও আশ্বাস দেন তারা।