মধ্যনগরে পেঁয়াজের চাষ বেড়েছে দ্বিগুণ

মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:২৯ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
লাভজনক হওয়ায় সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে পেঁয়াজের চাষ বেড়েছে। এ বছর এ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বিগুণ জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। দিন-রাত একাকার করে পেঁয়াজের ক্ষেত পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলার কৃষিবিভাগের কার্যক্রম পাশের ধর্মপাশা উপজেলা থেকে পরিচালিত হয়। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, গত বছর মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলায় ৪৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষ করে লাভবান হয়েছিলেন চাষিরা। তাই চলতি অর্থবছরে শুধু মধ্যনগর উপজেলায় প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন চাষিরা।
এর মধ্যে উপজেলার বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নে পেঁয়াজের চাষ করা হয়েছে প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে। সারা উপজেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৪০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নে ১০ জন কৃষককে বীজ ও সার সহায়তা দেয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন: দেশে ফ্যাসিবাদের ফিরে আসার সুযোগ নেই
উপজেলার বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের দাতিয়াপাড়া গ্রামের মো. বাসেত ভূঁইয়া জানান, বাজারে চড়া দামে পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ায় অতীতের তুলনায় অধিক জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছি। কিন্তু এ বছর পেঁয়াজ চাষে বিঘাপ্রতি খরচ বেড়েছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা। কৃষি অফিস থেকে বীজ, সার, কীটনাশক সহায়তা পেয়েছি। জমি চাষ, চারা রোপণ, পরিচর্যাসহ প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হবে। আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতি বিঘায় ৬০ থেকে ৭০ মণ ফলন পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।
একই ইউনিয়নের তেলীগাও গ্রামের কৃষক রিপন মিয়া বলেন, এক বিঘা জমিতে চারা রোপণ করেছি। এবার ৩ হাজার পাঁচশ টাকার পেঁয়াজের বীজ কিনতে হয়েছে। সবমিলিয়ে বিঘাপ্রতি খরচ পড়ছে প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ মণ পেঁয়াজ পাব বলে আশা করছি।
উপজেলার বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়নের রুপনগর গ্রামের রফিকুল ইসলাম নামের এক কৃষক বলেন, ভরা মৌসুমে কৃষকরা লোকসানে পেঁয়াজ বিক্রি করে চাষাবাদে হতাশ হয়েছিল। তবে শেষ সময়ে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা মণ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। অসময়ে ভালো দামে বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
আরো পড়ুন: বেক্সিমকোর ৪০০০ কোটি টাকা গেলো কোথায়, প্রশ্ন বাণিজ্য উপদেষ্টার
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ তুষার বলেন, চলতি অর্থবছরে এ উপজেলায় প্রায় ৩৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এবার মাঠের হিসাবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় ৪০ হেক্টরের অধিক জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এ উপজেলার কৃষকদের সবসময় কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। গত বছর পেঁয়াজের চড়া দাম থাকায় এ বছর পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ বাড়িয়েছে কৃষকরা।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন,
হাওরে মশলা ফসলের সম্প্রসারণের জন্য কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে, এ বছর মধ্যনগর উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে। ফ্রিপ প্রকল্পের আওতায় নতুন জাতের পেঁয়াজ প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করা হয়েছে।