এস আলম মুক্ত হলো আরো দুই ব্যাংক

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
এবার ভেঙ্গে দেয়া হলো এস আলম গ্রুপের দখলে থাকা আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। একই সঙ্গে ব্যাংক দুটিতে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এস আলম গ্রুপের কবল থেকে ৮টি ব্যাংক দখলমুক্ত হলো।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের পৃথক দুটি আদেশে পর্ষদ বাতিল করা হয়, ওই আদেশে নতুন পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার ব্যাংক দু’টির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রেরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ব্যাংক-কোম্পানি আইন, ১৯৯১ (২০২৩ পর্যন্ত সংশোধিত) এর ৪৭(১) এবং ৪৮(১) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আগের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে ব্যাংক-কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ ব্যাংক এ দু’টি ব্যাংকে পরিচালকদের নিয়োগ দিয়েছে।
ব্যাংক দুটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে পাঠানো আদেশে বলা হয়, আমানতকারী ও ব্যাংকের স্বার্থ সংরক্ষণ ও সুশাসন নিশ্চিত করতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. আতাউর রহমান, মেঘনা ব্যাংকের সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মহসিন মিয়া ও চার্টার্ড একাউন্টেট শেখ আশ্বফুজ্জামানকে।
আরো পড়ুন: খেলাপি ঋণ ছাড়ালো ২ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা
এ ছাড়া দুজন পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা হলেন— অর্থ মন্ত্রণালয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব কামরুল হক মারুফ ও জনতা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম মরতুজা। কামরুল হক মারুফ বর্তমানে সরকারের প্রতিনিধি পরিচালক হিসেবে আছেন এবং গোলাম মরতুজা জনতা ব্যাংকের প্রতিনিধি হিসেবে আছেন।
আল-আলাফাহ ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হয়েছেন খাজা শাহরিয়ার। তিনি লংকা বাংলা ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক। পর্ষদের অন্য স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন- বাংলাদেশের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. শাহীন উল ইসলাম, এনআরবি ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল ওয়াদুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের অধ্যাপক এম আবু ইউসুফ এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেট মোহাম্মদ আশরাফুল হাছান।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। এরপর আত্মগোপনে গিয়ে গভর্নর পদ থেকে পদত্যাগ করেন আব্দুর রউফ তালুকদার। নতুন গভর্নর হিসেবে যোগ দেন ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি এসে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন শুরু করেন। বিশেষ করে ব্যাংক দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেন।
এর আগে আরো আটটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এগুলো হলো— ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী, ইউনিয়ন, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউসিবি, এক্সিম ব্যাংক এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। পর্ষদ পুনর্গঠনের তালিকায় আজ যুক্ত হলো আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।