ডেপুটি গভর্নর খুরশিদ আলম
বাংলাদেশ ব্যাংকে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রবেশে বাঁধা নেই

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ১০:২২ পিএম

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর খুরশিদ আলম
এবার বাজেট হচ্ছে ৮ লাখ কোটি টাকার। বাজেট তো আর এমনি এমনি হয়না। মেগা প্রজেক্ট হচ্ছে। পদ্মা সেতু করেছি আমরা। অপপ্রচারকে আপনারা কেউ পাত্তা দেবেন না। আপনারা ডাটাবেইজ নিয়ে কথা বলবেন। রেমিটেন্স আবার ব্যাক করছে। বাড়ছে। যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের দ্বারা বিভ্রান্ত হবেন না। কোথায় আমাদের সমস্যা? তবে উদীয়মান অর্থনীতির নানা চ্যালেঞ্জ থাকে। এটা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। শ্রীলংকা কোথায় গিয়েছিলো। আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সিঙ্গাপুরের চেয়ে ৫ গুণ বড় আমাদের অর্থনীতি, নেপালের থেকে ৭ গুণ বড়, ভুটানের চেয়েও বড়। আমরা দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কোনো সমস্যা নাই। খেলাপি ঋণের ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছি। গ্রাহকদের ব্যাংকিং বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রংপুর বিভাগে গ্রাহক সচেতনতা সপ্তাহ ২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর খুরশিদ আলম।
শনিবার (১৮ মে) দুপুরে পঞ্চগড়ের চেম্বার ভবন মিলনায়তনে এই কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন তিনি। এসময় তিনি আরো বলেন, বলা হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ। কে বললো ভাই। বাংলাদেশ ব্যাংকে তথ্য দেয়ার জন্য তিন তিনজন মুখপাত্র নিয়োগ দিয়েছি। আপনার তো তথ্যের দরকার। তথ্যের দরকার হলে তথ্যের জন্য একশবার যাবেন। প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানে একজন করে মুখপাত্র থাকে। সবার তো কথা বলার দরকার নাই। তিনজন মুখপাত্র আছে। তাদের কাছে যাবেন। সেখানে বসার যায়গা আছে। চায়ের ব্যবস্থা আছে। তারা যদি আপনাকে সেটিসফাই না করতে পারে আমরা চারজন ডেপুটি গভর্ণর আছি আমরা আপনাকে উত্তর দেবো। সমস্যা কোথায়? তাও বলা হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের অবাধ প্রবেশ নিষেধ। অবাধ বলতে কি? অবাধে কোথায় যায়? আপনার একটা প্রাইভেট কোম্পানি কি আরেকটি কোম্পানিকে অবাধে কোনো কিছু দেবে? জার্নালিষ্টকে দেবে যতোই বন্ধু হন? এ্যাবসার্ট। পৃথিবীর কোনো দেশে নাই। তাহলে আপনি বলছেন বাংলাদেশ ব্যাংকে আপনারা অবাধে যেতে চান। আমিতো যেতে নিষেধ করিনাই। আপনি তো যাননা। আমার লোকজন আপনার জন্য রেডি হয়ে আছে। যদি কোনো কর্মকর্তার কাছে একাই যেতে চান, যান। ধরুণ আমার কাছে একাই আসতে চান, আসুন। যেটা সিক্রেসী আইনে কাভার করেনা যতদুর খোলামেলা বলা যায় তারা বলে দেবে। কিন্তু আপনি রাষ্ট্রীয় সিক্রেসির তথ্য চাইবেন সেটা তো পারমিট করে না কেউ।
আরো পড়ুন: রাসায়নিক খাতের উন্নয়নে সরকারের সহযোগিতা চান ব্যবসায়ীরা
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, আলটিমেটলি আপনার উদ্দেশ্য দেশটার মঙ্গল আমাদেরও তাই। দেশটা হলো সবার। বঙ্গবন্ধু এটাই বলেছিলেন। এদেশের মেহনতী মানুষের মুক্তি। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে দেখেন, আমি ১৭ টা ডিপার্টমেন্ট চালাইতে হিমশিম খাই। আর প্রধানমন্ত্রী দেশ বিদেশ সামলাচ্ছেন। কি পরিমান পরিশ্রম করছেন তিনি ভাবতে পারেন।
তিনি আরো বলেন, আমরা ব্যাংকের ম্যানেজার পোষ্টিং দিয়ে বসে আছি। সে কি করছে না করছে আমরা সুপারভাইজ করছিনা। এটা চলবেনা। এ ব্যাপারে কোন ছাড় দেয়া হবেনা। ব্যবহারে সফট কিন্তু নিজেকে কঠোর করতে হবে। এটা সেন্ট্রাল ব্যাংকের মেসেজ।
ব্যাংকারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অর্থনীতি দিয়ে দেশটাকে এগিয়ে নিতে হবে আমাদের। সার্ভিস চার্জ কাটার আগে গ্রাহকদের মেসেজ দিন। আপনারা টিম পাঠাবেন। ব্যাংক ঋণ যদি ঠিক না থাকে তাহলে সমস্যা। অর্থনীতির ব্লাড হলো ফাইনেন্স সেক্টর। সুতরাং আপনাদেরকে সরকারের ট্যাক্স যেমন আদায় করতে হবে গ্রাহক থেকে আবার তারা যেনো হ্যারাজ না হয়। তারা যাতে অসন্তুষ্ট না হয়। বাংলাদেশ এখন অনেক দেশের কাছে রোল মডেল হিসেবে দাঁড়িয়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পেছনে তাকানোর সময় নেই। মানুষের আয় বেড়েছে। অনেকে না জেনে বিভ্রান্তীকর তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কর্মসূচীকে সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছে ব্যাংক এশিয়া পিএলসি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক নূরুল আমিন ও রুহুল আমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি এন্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্টের পরিচালক লিজা ফাহমিদা ও শায়েমা ইসলাম, ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাফিউজ্জামান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এফআইসিএসডি স্ট্রাটেজিক কম্যুনিকেশন টিমের প্রধান অতিরিক্ত পরিচালক মাহেনুর আলম। দিন ব্যাপি এই আয়োজনে অতিথিদের বক্তব্যের পাশাপাশি ব্যাংকিং সেবার বিভিন্ন প্রেজেন্টেশন দেখানো হয়। রংপুর বিভাগের প্রায় শতাধিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। সপ্তাহ ব্যাপী এই কর্মসূচী চলবে আগামী ২৪ মে পর্যন্ত।