কোটি টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলে ঢাকায় গণজমায়েতের চেষ্টা, আটক ৮৬

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৩ পিএম

মূল রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ। ছবি : সংগৃহীত
‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামে একটি এনজিও থেকে ঋণ দেয়ার প্রলোভনে লক্ষ্মীপুর থেকে বাস ও মাইক্রোবাস যোগে ঢাকায় নেয়ার পথে নারী ও পুরুষসহ ৮৫ জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা। আটক এসব মানুষদের জানানো হয়েছিল ঢাকায় সমাবেশে যোগ দিলেই সহজ শর্তে মিলবে এক লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ।
রবিবার (২৪ নভেম্বর) রাতে লক্ষ্মীপুর সদরের ভবানীগঞ্জ চৌরাস্তা, কমলনগরের করইতলা বাজার ও রামগতি উপজেলা থেকে তাদের আটক করা হয়। তাদের পরিবহনে ব্যবহৃত যাত্রীবাহী ৩টি বাস ও ৩টি মাইক্রোবাসও আটক করা হয়।
তবে পুলিশ বলছেন, প্রতাকর চক্রের খোঁজ নিতে এবং তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামে একটি এনজিও থেকে সহজ শর্তে ঋণ দেয়া হবে এমন প্রলোভনে স্থানীয় উম্মে হানি নামে এক নারী লক্ষ্মীপুর সদর, কমলনগর ও রামগতি উপজেলার অসহায় নারী ও পুরুষদের কাছ থেকে সহস্রাধিক ফরম পূরণ করে।
আরো পড়ুন : সাবেক এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সোমবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশে যোগ দিলেই মিলবে সর্বনিম্ন এক লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণ। এজন্য ঋণের আবেদন ও সম্মেলনে উপস্থিতির জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে তারা নিয়েছে এক হাজার টাকা। ঋণপ্রত্যাশী ও সম্মেলনে উপস্থিতির জন্য দেয়া হয়েছে টোকেন।
টোকেনধারী সবাইকে দেয়া হবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে তিন লাখ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণ। এমন শর্তে রবিবার রাতে বাস ও মাইক্রোবাস যোগে গ্রামের অসহায় শতাধিক নারী পুরুষকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় প্রতারক চক্র। এসময় রামগতি -লক্ষ্মীপুর সড়কের ভবানীগঞ্জ চৌরাস্তা এলাকায় ২৮ জন, কমলনগর করইতলা বাজার এলাকা থেকে ১১ ও রামগতি থেকে ৪৬ জনকে আটক করে স্থানীয়রা।
উৎসুক জনতার উপস্থিতিতে হট্টগোল শুরু হলে প্রতারক চক্রের সদস্যরা পালিয়ে যায়। এসময় সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে স্থানীয়রা আটকদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
ভুক্তভোগীরা জানান, ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাছে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রস্তাবনা দেয়া হবে। ওই টাকা দেশে ফিরিয়ে এনে প্রত্যেক আবেদনকারীকে ১ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়া হবে। এজন্য তাদের কাছে ফরম বিক্রি ও ঢাকায় যেতে উদ্ভুদ্ধ করা হয়েছে বলে জানান তারা।
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার আকতার হোসেন বলেন, একটি চক্র ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে গ্রামের মানুষকে ঢাকায় নেয়ার চেষ্টা করছিল। এসময় স্থানীয়রা তাদের আটক করে। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। মূল রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।