মুনতাহা হ’ত্যা’য় গ্রেপ্তার ৪

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫০ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
সিলেটের কানাইঘাট থেকে নিখোঁজ হওয়া শিশু মুনতাহা আক্তারকে (৫) অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুমের উদ্দেশ্যে ডোবায় পুঁতে রাখা হয়েছিল। নিখোঁজের ছয় দিন পর ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত একজনকে পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে। পরে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে ডোবা থেকে লাশ তুলে পুকুরে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। পুলিশ এসব তথ্য জানিয়েছে।
ইতোমধ্যে ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। তারা হলেন- মুনতাহার প্রতিবেশী কানাইঘাট সদরের বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীমা বেগম ওরফে মর্জিনা, তার মা আলিফজান বেগম, প্রতিবেশী নাজমা বেগম ও ইসলাম উদ্দিন। আরো কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়েছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানায়নি পুলিশ।
নিহত মুনতাহা কানাইঘাট সদরের বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।
পুলিশ বলছে, এর আগে মুনতাহার বাবা শামীম আহমদ গত শনিবার কানাইঘাট থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপহরণ মামলা করেছিলেন। আটক ব্যক্তিদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলা দায়েরের পর শনিবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুনতাহার প্রতিবেশী শামীমা বেগমকে থানায় নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। মুনতাহাকে প্রাইভেট পড়াতেন শামীমা। তবে সম্প্রতি মুনতাহার বাবা শামীমার কাছে মেয়েকে পড়াতে পাঠাননি। শামীমাকে আটকের পরই মুনতাহা নিখোঁজের ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। রবিবার ভোররাতে শামীমার মা ডোবা থেকে শিশু মুনতাহার লাশ নিয়ে পুকুরে ফেলতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন।
আরো পড়ুন: ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে ধরে পুলিশে সোপর্দ
শিশু মুনতাহার নিখোঁজের বিষয়টি নিয়ে কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা চলছিল। শিশুটি উদ্ধারে পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল পরিবার। এর মধ্যে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। ৩ নভেম্বর থেকে শিশুটি নিখোঁজ ছিল।
রবিবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে শিশু মুনতাহার মরদেহ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মুনতাহার চাচা কয়ছর আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, যাদের আটক করা হয়েছে তারা সবাই প্রতিবেশী। মুনতাহার বাবা আগে সৌদিপ্রবাসী ছিলেন। কয়েক বছর আগে দেশে ফিরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালান। তার পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ে। মুনতাহা তার পঞ্চম সন্তান। কারো সঙ্গে তার ভাইয়ের বিরোধ নেই। তবে শামীমার কাছে প্রাইভেট পড়াতে না দেয়ার ক্ষোভ থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে তার ধারণা।
সিলেটের সহকারী পুলিশ সুপার (কানাইঘাট সার্কেল) অলক কান্তি শর্মা বলেন, নিহত শিশু মুনতাহার বাবার দায়ের করা অপহরণ মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবেন।
পুলিশ বলছে, লাশ উদ্ধারের সময় শিশু মুনতাহার শরীরে কাদা লেগে ছিল। গলায় রশিজাতীয় কিছু পেঁচানো ছিল। এতে সন্দেহ করা হচ্ছে, শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
৩ নভেম্বর সকালে বাবার সঙ্গে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফিরে প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে খেলতে গিয়েছিল মুনতাহা। কিন্তু বিকেল হলেও বাড়িতে না ফেরায় খোঁজ নিতে গিয়ে মুনতাহার আর সন্ধান পাওয়া যায়নি। শিশুটি নিখোঁজের পর থেকে পরিবার দাবি করে আসছিল, পরিকল্পিতভাবে তাকে ‘অপহরণ’ করা হয়েছে।