কাউকে বাদ দিয়ে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না: জিএম কাদের

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫১ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের জানিয়েছেন, রাজনীতিকে দুই ভাগ করা হয়েছে। একটা ভাগ দেশপ্রেমিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আরেকটা ভাগ দেশপ্রেমিক নয় দেশদ্রোহী হিসেবে। আমরা তাদের (সরকার) হিসেব মতো দেশপ্রেমিক হওয়ার কথা। আমরা আন্দোলনে ছিলাম, আমাদের অনেক কর্মী জেল খেটেছে মামলা হয়েছে তাদের নামে। আমি নিজেও প্রতিদিন বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়েছি। সংসদে যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছি দেশের কোনো লোক তা সাহস করেনি।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে রংপুর নগরীর নিউ সেনপাড়ায় তার পৈত্রিক বাসভবন স্কাইভিউতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা জানান তিনি।
জিএম কাদের বলেন, আমার ধারণা, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চাচ্ছে। এখন ওনারা অনেক কথা বলেন, এটা জনগণের দাবি। জনগণ তাদের বক্তব্য অনুযায়ী তাদেরটা চায়, ওনারা কীভাবে বুঝলেন? জনগণ কী চায় আর কী চায় না ওনারা এখনো নির্বাচন করেননি। এখনো জনমত যাচাই হয়নি। নির্বাচন ছাড়া জনমত যাচাইয়ের কোনো অর্থ নেই। যারা করেন তারা সব সময় নিরপেক্ষ থাকতে পারেন না। কাজেই কোণঠাসা সেই অর্থে আমরা নেই।
তিনি বলেন, দেশের অর্ধেক লোকই যদি কোণঠাসা থাকে আমরা মনে করি না এটা বেশি দিন টিকবে। বর্তমান সরকার যদি সত্যিকার অর্থে আন্দোলনের সুফলকে জনগণের দোরগোড়ায় নিতে চান, আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মদানের যদি সঠিক মূল্যায়ন করেন, যদি তাদের সঠিকভাবে সম্মান প্রদর্শন করতে চান—কাউকে কোণঠাসা না করে অবাধ সুষ্ঠু অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার আসুক। তাদের হাতেই দিয়ে দেয়া হোক সংস্কারের কাজগুলো।
জিএম কাদের বলেন, বর্তমান সরকারের পক্ষে ওই ধরনের ঐক্যবদ্ধভাবে সংস্কার করা সম্ভব না। তারা কিছু সাজেশন দিয়ে যেতে পারেন রাজনৈতিক দলগুলো দেশের স্বার্থে সেটা ঠিক করবেন। তাতে করে আমরা মনে করি, তারা সংস্কারের প্রস্তাব দিয়ে চলে গেলে আমাদের সবার জন্য ভালো হবে। আওয়ামী লীগ আর বিএনপি এ দুটো দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে ভালো হবে না। কারণ, এ দুটো দলের ভোটার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তাহলে দুই দলের একটিকে বাদ দিলে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হয় না। সেই নির্বাচনে জনমতের সত্যিকার প্রতিফলন আসে না। এটা হলো বাস্তবতা। এটাকে মেনে নিয়ে নির্বাচনে আসতে হবে।
তিনি আরো বলেন, কাউকে বাদ দিয়ে বাকি সব দল নির্বাচন করলে নির্বাচনে জয়লাভ করা যায় কিন্তু সেই নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না। সত্যিকার অর্থে ওই নির্বাচনকে অবাধ নির্বাচনও বলা যায় না। অবাধ নির্বাচন বলতে যেকোনও লোক বাধাহীনভাবে ভোট দিতে পারবে এবং বাধাহীনভাবে দাঁড়াতেও পারবে। সে কারণে বাধা সৃষ্টি করে কম্পিটিটর কমিয়ে দিয়ে পট করে কিছু হয়ে গেলাম সেটার ফল যে ভালো হয় না তার জলজ্যান্ত উদাহরণ আওয়ামী লীগ। এরকম কাজ করে বড় ধরনের আঘাত পেয়েছে তারা। তাদের যথাযথ জবাব জনগণ দিয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ যদি একই কাজ করে তাদেরও এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। এ কারণে ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে
এর আগে, সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় ঢাকা থেকে সড়কপথে রংপুরে তার পৈত্রিক বাসভবনে এসে পৌঁছালে দলের নেতাকর্মীরা তাকে স্বাগত জানান। এ সময় মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, যুবসংহতি কেন্দ্রীয় নেতা হাসানুজ্জামান নাজিমসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।