ভারত সীমান্তের ইছামতী নদীর তীর থেকে ৩ বাংলাদেশি যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে পৃথকভাবে যশোরের শার্শা উপজেলার পাঁচ ভুলোট সীমান্তের ভারতীয় ইছামতি নদীর ফকিরবাড়ী ঘাট থেকে জাহাঙ্গীর কবির (৩৭) এবং পুটখালী চরের মাঠ ঘাট থেকে সাবুর আলীর (৩৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। একইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পাঁচ ভুলোট সীমান্তের ইছামতি নদী থেকে সাকিবুল ঢালীর (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত জাহাঙ্গীর কবির বেনাপোল পোর্ট থানার কাগজপুকুর গ্রামের ইউনুছ মোড়লের ছেলে। সাবুর আলী একই থানার দিঘীরপাড় গ্রামের উত্তরপাড়ার আরিফ হোসেনের ছেলে। সাকিবুল একই গ্রামের জামিনুর রহমানের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, রাতে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করায় তাদেরকে পিটিয়ে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। পরে তাদের লাশ এপাশে ফেলে রেখে গেছে। 

নিহত জাহাঙ্গীর কবিরের ভাই বলেন, আমার ভাই ১৫ বছর ধরে ভারত থাকেন। সেখানে বিয়ে করে ওই দেশের নাগরিক হয়ে বসবাস করছিলেন। সেখানে তার একটি কন্যা সন্তান আছে। তিনি কয়দিন আগে ভারত থেকে বাড়ি আসেন। গতরাতে সীমান্ত দিয়ে সেদেশে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সাবুর আলীর স্ত্রী হাসি বেগম বলেন, একজন বাড়িতে এসে খবর দেন পুটখালী আমবাগানে আমার স্বামীকে কে’বা কারা মেরে ফেলে রেখে গেছেন। পরে আমি একটি ইজিবাইক নিয়ে সেখানে গিয়ে দেখি তিনি অচেতন অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন। তখন তাকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হলে পথে মারা যান। 

পুটখালী বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার সলিমুল্লাহ এবং পাঁচ ভুলোট বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার বাচ্চু মিয়া জানান, এদিন সকালে সীমান্তের ইছামতি নদীর তীর থেকে দুই বাংলাদেশি যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পাঁচ ভুলোট সীমান্তের ইছামতি নদী থেকে আরেক যুবকের ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে কে’বা কারা তাদেরকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তা জানা যায়নি।

শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমির আব্বাস জানান, পাঁচ ভুলোট সীমান্ত থেকে জাহাঙ্গীরের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সাকিবুল নামে আরেক যুবকের লাশও উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। 

বেনাপোল পোর্ট থানার সেকেন্ড অফিসার ও সুরতহাল রিপোর্টকারী লিখন কুমার জানান, পুটখালী সীমান্ত থেকে সাবুর আলীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। পথিমধ্যে তিনি মারা যান। তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। 

এলাকাবাসী জানান, মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে ৫ যুবকের একটি দল চোরাকারবারি পণ্য আনতে পাঁচভুলোট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে যায়। এর মধ্যে ৩ যুবকের পিটিয়ে হত্যা করা লাশ সীমান্তের ইছামতি নদীর তীর থেকে উদ্ধার করা হয়। এখন পর্যন্ত দুই জনের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।