বেকার যুবকদের আদর্শ কৃষক দীন মোহাম্মদ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২০, ১১:০৮ এএম

ছবি: প্রতিনিধি
‘দেশের এক ইঞ্চি পতিত জমিও খালি থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন ঘোষণা শোনার পর নোয়াখালী জেলা শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের সৌখিন কৃষক দীন মোহাম্মদ নিজে উদ্ধুদ্ধ হয়ে শহরের বুকে তাঁর পতিত ৭০ শতাংশ জমিতে সবজি ও বিভিন্ন জাতের ফলের গাছ লাগিয়েছেন। মাত্র তিন মাসের মধ্যে কৃষি কাজে সফলও হয়েছেন তিনি। শহরের পতিত জমিতে অসময়ে ধানের ভালো ফলন দেখে চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ হন অনেকে। বাড়ির আঙ্গিনায় বিষমুক্ত ফলন পেয়ে খুশি কৃষক পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসী।
কৃষক দীন মোহাম্মদের এমন সফলতায় গ্রামের বেকার যুবকরা উৎসাহিত হন তাদের পতিত জমিতে ফসল ফলানোর জন্য। দীন মোহাম্মদ এখন গ্রামের বেকার যুবকদের আদর্শ হয়ে উঠেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কৃষক দীন মোহাম্মদ তাঁর বাড়ির পাশে পড়ে থাকা ৭০ শতাংশ জমির মধ্যে ৫০ শতাংশ জমিতে ব্রি-৫৪ জাতের ধান লাগান। জমির চার পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা টুকরো জমিতে মাটি ভরাট করে জৈবিক পদ্ধতিতে বিষমুক্ত লাউ, করলা, লাল শাখ, মিষ্টি কুমড়াসহ নানা ধরনের রঙ্গিন সবজি চাষ করেন। বাড়ির আঙ্গিনায় লাগিয়েছেন বিভিন্ন প্রজাতির ফলের গাছ।
দীন মোহাম্মদের পতিত জমির ধানের শীষে দৌল খাচ্ছে সবুজের সমারোহ। তিনি নিজ জমি থেকে লাউ, করলা, লাল শাখ, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন বিষমুক্ত সবজি পাচ্ছেন নিয়মিত। নিজ তৈরি একাধিক কৃষি ভিত্তিক স্লোগান ঝুলিয়ে দিয়েছেন জমির পাশে।
কৃষক দীন মোহাম্মদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ নিদের্শনা পেয়ে সরকারি গুদাম থেকে ধান বীজ নিয়ে ৫০ শতাংশ জমিতে অসময়ে ধান চাষ করি। ধান চাষে আমার বাড়তি কোন পরিশ্রম লাগেনি, নরমাল পরিশ্রমে অল্প সময়ে ধানের ভালো ফলন হয়েছে।
দীন মোহাম্মদের কৃষি কাজে সহযোগিতা করেন স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে। বসতঘরের চারপাশ ও বাড়ির আঙ্গিনায় আছে আম, আমড়া, বাতাবি লেবু, কামরাঙ্গাসহ বিভিন্ন ফলের গাছ। বিষমুক্ত এসব ফসল তারা বাজারে বিক্রি না করে পরিবারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশিদের বিলিয়ে দেন।
দীন মোহাম্মদের কৃষি জমি দেখতে আসা সালেহ উদ্দিন সবুজ, মো. রহমান, এ খালেক বলেন, পতিত জমির বালু মাটিতে অসময়ে ভালো ধান হয়েছে। তাঁর এ কৃষিকর্ম আমাদেরকে উৎসাহিত করে তুলেছে। বেকার সময় না কাটিয়ে তাঁর মতো বাড়ির আঙ্গিনায় কৃষি কাজ করলে আমরাও সফল হতে পারবো।
জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবু তাহের বলেন, দীন মোহাম্মদের এ কৃষি কাজ দেখে জেলা শহরের বহু মানুষ তাদের বাড়ির পতিত জমি ও বাড়ির ছাদে কৃষি কাজে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশরেফুল হাসান বলেন, দীন মোহাম্মদের মতো প্রতি বাড়িতে পতিত জমি আবাদ হলে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন হবে এবং দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে।