×

সারাদেশ

বন্যা আতঙ্কে মধ্যনগরবাসী

Icon

রাসেল আহমদ, মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) থেকে

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫৫ পিএম

বন্যা আতঙ্কে মধ্যনগরবাসী

ছবি: ভোরের কাগজ

   

অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদী ও হাওরে পানি বাড়ায় সুনামগঞ্জ জেলার সবচেয়ে নিম্নাঞ্চল মধ্যনগরে তৃতীয় ধাপে বন্যা হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে টাঙ্গুয়ার হাওরের পশ্চিম পাড়ের মধ্যনগরের মানুষ।

গত বুধবার (১০ জুলাই) থেকে মধ্যনগরসহ সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। সুনামগঞ্জে একদিনে ১৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। আর সুনামগঞ্জের ঠিক উপরে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে ১৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। 

এই অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড়ি ঢলে মধ্যনগরের টাঙ্গুয়ার হাওরের পানি বেড়েছে। তৃতীয় ধাপে আবারো বন্যা পরিস্থিতিতে পড়েছে মানুষ। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আবারো পানি উঠেছে। মধ্যনগরের মানুষ বন্যাতঙ্কে ভুগছে।

উপজেলার বংশীকুন্ডা গ্রামের বাসিন্দা ইসলাম উদ্দিন বলেন, দুইবারের বন্যা আর ঢেউ আমার ঘরের অর্ধেকের বেশি অংশ ভেঙে নিয়ে গেছে। আমার মতো বহু মানুষের বাড়ি-ঘর ভাঙছে। এখন আবার পানি বাড়ছে। বছরে তিন চারবার বন্যা হলে হাওর এলাকায় মানুষ বসবাস করতে পারবে না।

উপজেলার দক্ষিণউড়া গ্রামের বাসিন্দা রবীন্দ্র সরকার বলেন, 'বন্যায় বাড়ি-ঘরের ক্ষতি তো হইছেই, আমার খেড়ের থোপা (খড়ের স্তপ) পানিতে ভিজে বেশীরভাগ পঁচে গেছে। আট-নয়টা গরু কি খাওয়াইয়া বাঁচবো, এই চিন্তায় আছি। সবার খেড় নষ্ট হয়ে গেছে, কিনতেও (ক্রয়) পাওয়া যাবে না।'

ছবি: ভোরের কাগজ

আরো পড়ুন: সুনামগঞ্জে পানি বেড়ে প্রবেশ করছে লোকালয়ে

এর আগে টানা অতি ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে গত ১৭ জুন প্রথম ধাপে ও ১ জুলাই দ্বিতীয় ধাপে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। যার ফলে মধ্যনগর উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়। এসব গ্রামের অর্ধ লাখ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় ছিলো।

এখনো উপজেলার অনেক গ্রাম প্লাবিত রয়েছে। এখনো অনেক বাড়ি-ঘর থেকে পানি নামে নি। পানিতে ডুবে রয়েছে উপজেলার প্রধান সড়কসহ সব গ্রামীণ কাঁচা পাকা রাস্তা। কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। 

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে ওই দুই ধাপের বন্যায় মধ্যনগর উপজেলায় ১১২ কোটি ৯১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার থেকে আবারো নদী ও হাওরে পানি বাড়ায় আতঙ্কিত হয়ে পরেছে মধ্যনগরের মানুষ। 

টাঙ্গুয়ার হাওরের পাশাপাশি মধ্যনগরের প্রধান দুটি নদী সোমেশ্বরী ও উব্দাখালীতেও পানি বেড়েছে। নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরাফাত আহমেদ জানিয়েছেন, শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল তিনটায় সোমেশ্বরী নদীর পানি ২.৩৪ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও উব্দাখালী নদীর পানি বিপদসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আরো পড়ুন: রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত

ছবি: ভোরের কাগজ

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেছেন, সুরমা নদীর পানি শুক্রবার বিকেল তিনটায় বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সন্ধ্যা ছয়টায় ৭ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

এদিকে সুরমা নদীর পানি উজান পাটলাই নদী হয়ে টাঙ্গুয়ার হাওরের পানি বৃদ্ধি করছে। এতে টাঙ্গুয়ার হাওরের মধ্যনগর অংশে বন্যার ঝুঁকি বেড়েছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে ৩০-৩৫টি গ্রাম।

মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, পানি বাড়ছে। আমরা দূর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। শুকনো খাবার মজুদ আছে। বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। 

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান প্রকৌশলী খুশি মোহন সরকার বলেন, কয়েক দিন ধরে বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ায় নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এ ছাড়া পাহাড়ি ঢল নামলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তবে বড় ধরনের বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই। 

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App