সুনামগঞ্জে পানি বেড়ে প্রবেশ করছে লোকালয়ে

মো. সাজ্জাদ হোসেন শাহ্, সুনামগঞ্জ থেকে
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৬:২১ পিএম

ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে আবারো হাওরের জেলা সুনামগঞ্জে নদীর পানি বেড়েছে
গত দুদিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে আবারো হাওরের জেলা সুনামগঞ্জে নদীর পানি বাড়ছে। সেই পানি ধীরে ধীরে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। ফলে জেলাবাসী তৃতীয় দফায় বন্যাকবলিত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে পানি বাড়লে বন্যা হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৩টায় সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
তৃতীয় দফায় পানি বাড়ায় তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা একশো মিটার ব্রীজ থেকে মোকামবাড়ি পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক চলতি মৌসুমে ২০ দিনের ব্যবধানে তৃতীয়বারের মতো পানিতে তলিয়েছে। এতে করে জেলা সদরের সঙ্গে তাহিরপুর উপজেলার সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। জরুরী প্রয়োজনে যাত্রীরা সড়কের এ অংশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট খেয়া নৌকা করে মোটরসাইকেল নিয়ে যাতায়াত করছেন।
এদিকে একই সড়কের তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ারপুর অংশেও পানি উঠেছে। তবে সড়কের এ অংশটিতে পানির স্রোত কম থাকায় যাত্রীরা পায়ে হেঁটে পার হতে পারছেন। যাত্রী নামিয়ে সিএনজি, মোটরসাইকেল এবং অটোরিক্সাও চলাচল করতে পারছে। এদিকে সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের গ্রামীণ সড়কগুলো আবারো পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। তবে এখনো কারো বসতভিটায় পানি উঠেনি।
আরো পড়ুন: অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হলেন তাহিরপুরের ইউএনও সালমা পারভীন
আরো পড়ুন: রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত

এদিকে আবারো তাহিরপুর উপজেলার বড় ব্যবসাকেন্দ্র বাদাঘাটের সঙ্গে তাহিরপুর উপজেলা সদরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সড়কের কোনো কোনো অংশে হাঁটু পানির উপরে, এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীদের।
তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের বাসিন্দা তুদরত আলী বলেন, কয়েকদিন পরপর এ সড়কটি পানিতে তলিয়ে যায়। জরুরী প্রয়োজনে এ সড়ক দিয়ে উপজেলার বড় ব্যবসাকেন্দ্র বাদাঘাট বাজারে যাতায়াত করতে আমাদেরকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। গুরুতর অসুস্থ্য কোনো রোগীকে নিয়ে উপজেলা সদর হাসপাতালে নৌকা ছাড়া যাওয়া যাচ্ছে না।
সুনামগঞ্জ জেলা সদর থেকে মোটরসাইকেলে তাহিরপুরে আসছিলেন সিরাজুল ইসলাম তিনি একটি ঔষধ কোম্পানিতে কাজ করেন। জরুরী প্রয়োজনে তাহিরপুরে যেতে হচ্ছে তাকে। তিনি বলেন, শক্তিয়ারখলা সড়কের ১০০ মিটার অংশে পানি। মোটরসাইকেল নিয়ে কয়েকঘন্টায় পার হতে পেরেছি। এ সড়কের আনোয়ারপুর অংশও পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এই কয়েক জায়গার পানি মাড়িয়ে তাহিরপুর যেতে হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে ১৫৫ মি.মি. এবং ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ১৬০ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে সুনামগঞ্জে পানি বাড়লেও তার স্থায়িত্ব হবে না। তিনি আরো জানান, আগামী ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তবে জেলায় তৃতীয় দফা বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই।