সাপের আতঙ্কের মধ্যেই দেশে হানা দিলো বিশ্বের এক ভয়ঙ্কর শামুক!

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৬ এএম
ভয়ানক রাইসেলস ভাইপারের আতঙ্কে কাঁপছে পুরো দেশ। পল্লী গ্রাম থেকে আধুনিক শহর কিংবা কোন বিচ্ছিন্ন লোকালয়- সবখানেই বিদ্যুৎ গতিতে পৌঁছে যাচ্ছে এই বিষাক্ত সাপের দলের হানা। এই আতঙ্ক কাটিয়ে ওঠার আগেই আরও এক ভয়ানক প্রাণীর হানা পড়লো দেশে। এবার এই নতুন আতঙ্ক হয়তো আরও ভোগান্তিতে ফেলবে দেশবাসীকে, যার জন্য দ্রুত প্রস্তুতি নেয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই।
কৃষি ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ভয়ংকর আফ্রিকান জায়ান্ট প্রজাতির শামুকের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে দেশের কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে। এই এলাকার সাধারণ জনগণ এই শামুকের ভয়াবহতা সর্ম্পকে অবগত নয়। জানা গেছে- এই শামুক আজ পর্যন্ত বিশ্বের যেসব দেশে ছড়িয়েছে সেসব দেশের জীব বৈচিত্র্য ও কৃষি ব্যবস্থা চরম হুমকির মুখে পড়েছে। এই ভয়ানক প্রাণীটি বিশেষ করে ফসলের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বাগান নষ্ট করে ফেলা এদের কাছে কোন ব্যাপারই না। এই শামুক সড়কে অবস্থান করায় বৃষ্টির দিনে ছোট ছোট যানবাহনের জন্যও ব্যাপক ঝুঁকি রয়েছে। এ ক্ষতিকর আফ্রিকান শামুক নির্মূল না করা হলে প্রকৃতির জন্য ভয়াবহ হুমকি স্বরূপ হয়ে দাঁড়াবে।
স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা হলেই ঝাঁকে ঝাঁকে রাস্তা ঘাটে বের হয়ে আসে আফ্রিকান জায়ান্ট প্রজাতির এই শামুকের দল। আর দিনের বেলায় অত্যাধিক সূর্যের আলো থেকে বাঁচতে লুকিয়ে থাকে এরা। অতি বৃষ্টির সময় এরা দালান-বাড়ির দেওয়াল বেয়ে উপরে উঠে আশ্রয় নেয়। দালানের জন্যও এ শামুক মারাত্মক ক্ষতিকর। এমনকি এই শামুকের মাংস খুব শক্ত বিধায় পশু-পাখিরাও খেতে তা চায় না।
জানা গেছে বিশ্বের অনেক দেশই এই শামুক শতভাগ নির্মূলের জন্য রীতিমতো যুদ্ধ করছে। এর মধ্যে অন্যতম হল আমেরিকার ফ্লোরিডা, ভারতের কেরেলা এবং কর্ণাটক রাজ্যের কোদাগু জেলা। ভারতে গত তিন দশক ধরে এই শামুকের সঙ্গে রীতিমতো যুদ্ধ করে আসছে সেখানকার জনগণ এবং প্রশাসন। সম্প্রতি তারা সফলতার মুখ দেখতে পেরেছেন। বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরাও এই শামুক নির্মূলের বিষয়ে নানা রকম গবেষণা অব্যাহত রেখেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিরীহ এ প্রাণিটি প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে। বিচিত্র নতুন প্রজাতির এ শামুকটি উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু ছড়িয়েই পড়েনি, হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে স্থানীয় কৃষি ব্যবস্থাকে। স্থানীয়রা জানান, এই শামুক রাতে হাঁটা চলা করতে দেখা যায়, খুবই ভয়ংকর প্রজাতির শামুক এটি, বাড়ির গাছে, ঘরের দেওয়ালে ও ঘরের বেড়ায় দলবেঁধে বসে থাকে। বিভিন্ন গাছের পাতা, ফলমূল খেয়ে নষ্ট করতে শুরু করেছে এরা।
তাই সচেতন মহলের ধারণা,ক্ষতিকর শামুকের এ প্রজাতিটি নির্মূলের জন্য এখনই সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং যেভাবেই হোক এর প্রজনন ও বৃদ্ধি প্রক্রিয়া নষ্ট করতে হবে। তা না হলে এটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে। এতে গোটা দেশের কৃষি ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়বে।
মূলত: শামুক হচ্ছে প্রাকৃতিক ফিল্টার। স্থানীয় বিশেষজ্ঞরা জানান, শামুক পরিবেশের বিশেষ বন্ধু হিসেবে পরিগণিত। আমাদের দেশীয় যে শামুক আছে সেটি উপকারী। তারা স্থলভূমিতে উঠে আসে না, বরং পানিতেই থাকে। কিন্তু আফ্রিকান জায়ান্ট শামুক লোকালয়ে উঠে এসে গাছপালা, লতাপাতা, ফলমূল খেয়ে ধ্বংস করে ফেলে। যা আমাদের দেশের কৃষির জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। দেশের কয়েকজন কৃষিবিদ জানিয়েছেন, এই প্রজাতির শামুক অনেক ক্ষতিকর। তাই এটি যার সামনেই পড়ুক, সঙ্গে সঙ্গে এটাকে মেরে ফেলাই উত্তম বলে মন্তব্য করেন তারা।