সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের বাড়িতে শোকের মাতম

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৫:৫৯ পিএম

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত যুবক মোহাম্মদ তারেক ও মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।
সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ প্রবাসী বাংলাদেশির গ্রামের বাড়িতে চলছে স্বজনদের শোকের মাতম। রবিবার (৩০ জুন) বিকেলে নিহতদের বাড়িতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আত্মীয় স্বজনরা বাড়িতে ভিড় করেছেন। মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের বাবা হাজী নুর আহমদ ও মোহাম্মদ তারেকের বাবাসহ স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।
মহিউদ্দিনের বাবা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, 'ছেলে আমাকে ৭ বছর আগে সৌদিতে যাওয়ার সময় বলেছিল ‘বাবা তোমাকে আর চাউল কিনতে হবে না। আমি চাউল কিনে বাড়িতে পাঠাবো। আমি তার কাছে চাউল কেনার কথা বলিনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখন তো আমি এক জোড়া কবুতর হারিয়েছি (তার নিজের ছেলে ও ভাইয়ের ছেলে)। আমি এ শোক কিভাবে সইবো। আর কয়েক মাস পর ছেলে বিদেশ থেকে এসে পাকা ঘর তুলে নতুন বউ আনার পরিকল্পনা চলছে। একটি দুর্ঘটনায় আমার পরিবারের সব স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল।'
আরো পড়ুন : শিবগঞ্জে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, স্বামী আটক
গত শনিবার (২৯ জুন) সৌদি আরবের স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে (বাংলাদেশ সময় রাত ২টা) জেদ্দা-মদিনা সড়কে আলীতমা এলাকায় হাজী বহন করা বাসের সাথে সবজিবাহী পিকআপের সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলে দুজন নিহত হয়। নিহতরা একে অপরের আপন চাচাতো ভাই। তারা সবজি নিয়ে মদিনা শহরে যাচ্ছিল। এ দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাদের গ্রামের বাড়িতে খবর আসলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। মুহূর্তে পরিবারগুলোতে শোকের ছায়া নেমে আসে।
নিহতরা হলেন, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নের মধ্যম মাদার্শা মাঝের দোকান এলাকার মিয়ার বরপাড়ার নুর আহমেদর ছেলে মোহাম্মদ মহিউদ্দিন (২৭) ও আব্দুল করিমের ছেলে মোহাম্মদ তারেক (২২)। এ ঘটনায় আহত গাড়ি চালক একই ইউনিয়নের বড় ডেবা এলাকার মৃত আব্দুল জব্বার ছেলে মনছুর আলীকে (২৮) পুলিশ উদ্ধার করে জেদ্দার কিং ফাহাদ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মাদার্শা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম জানান, মহিউদ্দিন ও তারেক মদিনা শহর থেকে কিছু দূরে বিল মাশি এলাকায় মাজেরা (সবজি চাষ) করেন। সেখান থেকে তারা দুজন একটি পিকআপ ভ্যানে করে সবজি নিয়ে মদিনা শহরে যাচ্ছিল। এসময় একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে তাদের গাড়ির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে মহিউদ্দিন ও তারেক নিহত হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আহত গাড়ি চালক মনছুর আলীকে উদ্ধার করে জেদ্দার কিং ফাহাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের পরিবারের সিদ্ধান্ত মহিউদ্দিন ও তারেকের লাশ জান্নাতুল বাকীতে দাফন করা হবে।