×

সারাদেশ

কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দে ধরা পড়েন কারাগার পালানো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামি

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ১০:২৮ এএম

কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দে ধরা পড়েন কারাগার পালানো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামি

ছবি: সংগৃহীত

   

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি বগুড়া জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। কারাগারের কনডেমড সেলের ছাদ ফুটো করে করতোয়া নদীর তীর ধরে পালাচ্ছিল চার কয়েদি। কারাগার থেকে উত্তর দিকে প্রায় আধা কিলোমিটার পথ নদীর পাড় ধরে এগিয়ে যান তারা। গন্তব্য ছিল নির্মাণাধীন শহরের ফতেহ আলী সেতুর পাশে বাঁশের সাঁকো। সাঁকো পার হয়ে সাবগ্রাম দ্বিতীয় বাইপাস সড়কে গিয়ে দূরপাল্লার বাস ধরবেন।

বাঁশের সাঁকো পার হওয়ার আগেই বাগড়া দেয় ফতেহ আলী বাজারের পাশে থাকা একদল কুকুর। রাতের অন্ধকারে মানুষের উপস্থিতি টের পেয়েই ঘেউ ঘেউ করতে থাকে কুকুরের দল। আওয়াজ পেয়ে এগিয়ে আসেন কয়েকজন যুবক। একজনের হাতে স্ক্রু ড্রাইভার, অন্যজনের পরনে জেলখানার কয়েদির ট্রাউজার। শরীর ঘামে আধভেজা। একজনের হাতে ব্যাগে সিগারেটের অনেক প্যাকেট। এসব দেখে যুবকেরা সেখানে এসে চারজনকে নানা প্রশ্ন করতে শুরু করেন। এসময় চারজন নিজেদের রাজমিস্ত্রি বলে পরিচয় দেন।

বগুড়া জেলা কারাগার থেকে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টা ৫৬ মিনিটের দিকে ছাদ ফুটো করে রশির মাধ্যমে প্রাচীর টপকে পালান মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বুধবার ভোরে শহরের চেলোপাড়া চাষীবাজারের মাছের আড়ত এলাকা থেকে তাদের আটক করে। এর আগে তাদের ধরে ফেলেন কয়েকজন যুবক। এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এসব তথ্য।

বগুড়ার পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘আসামিরা তাদের ব্যবহার করা বিছানার চাদরকে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে। সুযোগ মতো কারাগারের ছাদ ফুটো করে বাইরে বের হন তারা। এরপর কারাগারের সীমানা প্রাচীর টপকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে তারা পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার পরপরই জেলা কারাগার থেকে আমাদের জানানো হয়। কারাগার থেকে তাদের ছবি দেয়া হয় আমাদের। আমরা সেই অনুযায়ী রাতেই অভিযান শুরু করি। পরে ভোররাতে তাদের চাষীবাজার থেকে ফের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের জেলা ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হলে কারাগারের সুপার এসে তাদের শনাক্ত করেন। এই ঘটনায় একটি মামলা হবে। মামলায় তাদের ফের আদালতে তোলা হবে।

ওই আসামিরা হলেন- কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার দিয়াডাঙ্গা গ্রামের নজরুল ইসলাম মঞ্জুর (৬০), নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার ফজরকান্দি গ্রামের আমির হামজা ওরফে আমির হোসেন (৩৮), বগুড়া সদরের কুটুরবাড়ি পশ্চিমপাড়ার ফরিদ শেখ (২৮) এবং বগুড়ার কাহালু উপজেলার উলট পুর্বপাড়ার বাসিন্দা মো. জাকারিয়া (৩১)। এদের মধ্যে জাকারিয়া বগুড়ার কাহালুর শিশু নাইম হত্যা ও লাশ ভাটায় পুড়িয়ে ফেলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত। এছাড়া নজরুল ইসলাম মঞ্জুর ও আমির হোসেন চারটি হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামিকে বগুড়া জেলা কারাগারের জাফলং সেলের ২ নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার রাত ৩টা ৫ মিনিটে  কারারক্ষী স্বপন মিয়া কারাগারের উত্তর পাশের কারাপ্রাচীরে বিছানার চাদর গিঁট দিয়ে তৈরি রশি ঝুলতে দেখেন। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান রক্ষী দুলাল ও জেল সুপারকে জানানো হয়। পরে প্রধান কারারক্ষী আমিনুল হক জানান, জাফলং সেলে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া চারজন বন্দী নেই। 

সেলে গিয়ে দেখা যায়, কারাগারের জাফলং সেলের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ছাদ ফুটো করা। পরে বগুড়ার পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানানো হয়। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পলাতক কয়েদিদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করে। ভোর অনুমান ৪টা ১০ মিনিটে চাষীবাজার এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় কয়েদি ফরিদ শেখের কাছ থেকে ৪ দশমিক ৩ ইঞ্চি লম্বা একটি স্টিলের পাত, ৭ ইঞ্চি লম্বা একটি স্ক্রু ড্রাইভার উদ্ধার করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ সুজন মিঞা বলেন, চার কয়েদিকে নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে কি না, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App