মরিচ-পেঁয়াজে প্রচণ্ড ঝাঁজ, ডিমের দামে রেকর্ড

শেখ মাহতাব হোসেন, (ডুমুরিয়া) খুলনা থেকে
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪, ০১:১২ পিএম

ফাইল ছবি
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরেই নিত্যপণ্য, কাঁচা বাজার, মাছ-গোশত, এমনকি মসলাজাত পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। সপ্তাহের ব্যবধানেই বেড়ে যাচ্ছে সবজিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম। বিশেষ করে অস্থির হয়ে উঠেছে কাঁচামরিচের বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে পেঁয়াজসহ কিছু পণ্যের দাম। ডুমুরিয়া বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতোই উচ্চ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে শাক-সবজি, চিনি, চাল, আটা, ডাল ও মাছ। তবে কোরবানির পরে মুরগীর দাম কিছুটা থম ধরে আছে।
ঈদের আগে থেকেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কাঁচা মরিচের দাম। বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা বিক্রি হয়েছিলো ২০০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ১০০ টাকারও বেশি।
এছাড়া ঈদের আগে পাইকারি ৭৫-৮০ টাকা কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। কিন্তু রবিবার (২৩ জুন) পাইকারিতে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়। এছাড়া খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যেখানে গত সপ্তাহেও ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে পেঁয়াজ। বিভিন্ন জাতের এবং আমদানি করা রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৭০ টাকায়।
এদিকে, আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, যা গত এক-দুই সপ্তাহে অনেক জায়গায় ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। স্থান ভেদে পাকা টমেটোর কেজি ৭০-৮০ টাকা, পেঁপে ৫০-৬০ টাকা, জাত ও মানভেদে বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০-৫০ টাকা, বরবটি ৭০-৮০ টাকা ও পটল ৪০-৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চিচিঙ্গা ৬০-৭০ টাকা, ঝিঙা ৬০-৭০ টাকা, কচুর লতি ৭০-৮০ টাকা, কচুর মুখী মানভেদে ৮০-১০০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, শসা ৫০-৬০ টাকা ও কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়।
আরো পড়ুন: সুন্দরগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল, বাড়ছে নদী ভাঙ্গন
মাছের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকা কেজি। আকার ও মানভেদে অনেকটা একই দামে বিক্রি হচ্ছে তেলাপিয়া। চাষের কই ২৮০-৩০০ টাকার নিচে মিলছে না। আকার ও মানভেদে রুই-কাতলার দাম হাঁকানো হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি। আকার ভেদে শিং মাছ ও বাইলা মাছ প্রতি কেজি প্রকার ভেদে ৬০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পোয়া মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০, পাবদা মাছ ৩৫০ থেকে ৫০০, মলা ৫০০, কাচকি মাছ ৬০০, বাতাসি টেংরা ৯০০, অন্য জাতের টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৭০০, পাঁচ মিশালি মাছ ৪০০-৫০০, বাইম মাছ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা ও রূপচাঁদার কেজি ১ হাজারে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
গোশতের দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, গরুর গোশতের কেজি ৭৮০-৮০০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজি স্থানভেদে ১৯০-২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সোনালী ও লেয়ার জাতের মুরগির কেজি স্থানভেদে ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। খাসির গোশত আগের মতোই ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
স্বল্প আয়ের মানুষের পুষ্টির বড় অংশ পূরণ করে ফার্মের মুরগির ডিম। সেটির দামও লাফিয়ে বেড়ে এখন রেকর্ড গড়েছে। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায়। আর খুচরা বাজারে ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। নগরীর বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে জানা যায়, প্রতি হালি ডিমের দাম ৫ টাকা বেড়ে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় বাজার থেকে কিনলে ডিমের ডজন ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা আর খুচরা দোকানে ১৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
ডিম ব্যবসায়ীরা জানান, উৎপাদন খরচ নির্ধারণ না হওয়ায় ডিমের বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো ধারণা করা যাচ্ছে না। খামারিরা বলছেন, মুরগির খাদ্য ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিমের দাম বাড়ায় আমাদের কোনো হাত নেই।