বৃষ্টির অভাবে বরগুনায় জমিতেই নষ্ট হচ্ছে ফসল

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ মে ২০২৪, ১০:৫৯ এএম

ছবি: সংগৃহীত
গত দু-একদিন সারাদেশে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, ফলে গরম কিছুটা কমেছে। তবে বৈশাখের শুরু থেকেই বৃষ্টি না থাকায় বরগুনায় অনেক কৃষকেরই জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় চলতি মৌসুমে ফসল উৎপাদন কমার পাশাপাশি ব্যাপক লোকসানের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বৃষ্টিহীন বৈশাখে সর্বোচ্চ রেকর্ড ছাড়িয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকার তাপমাত্রা। আর এ তাপপ্রবাহে বরগুনার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের ফসলের ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। বিশেষ করে রোদে পুড়ে চীনাবাদাম, মরিচ, মুগডালসহ শত শত হেক্টর ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়েছে। এসব‘ জমিতে প্রখর রোদের মধ্যে পানি সেচ দিয়েও কৃষকরা রক্ষা করতে পারেনি তাদের বিভিন্ন ধরনের ফসল। এছাড়াও ক্ষেত থেকে উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে গিয়ে তীব্র গরমে ভোগান্তিতে পড়েতে হয়েছে তাদের।
বরগুনা সদরের বাঁশবুনিয়া এলাকায় দু-একদিনের বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তি মিললেও তাপপ্রবাহ ও পর্যাপ্ত পানির অভাবে চীনাবাদাম ও মরিচ গাছ পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। অন্যদিকে গরমে লোকবল সংকটে কৃষক ঘরে তুলতে পারেননি ক্ষেতের মুগডাল। এতে বিভিন্ন উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে লাভের বিপরীতে উৎপাদন খরচ তুলতেই হিমশিম খাচ্ছে কৃষক।
এ বছর রোদের কারণে মুগডাল নষ্ট হয়ে গেছে। লোকবলের অভাবে অনেকেই ক্ষেতের ফসল তুলতে পারেনি। মরিচ ও বাদামের উৎপাদন হয়নি বললেই চলে। রোদের কারণে এবার ফসলের ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক ।
বাঁশবুনিয়া এলাকার কৃষক কৃষক মো. নজরুল বলেন- ‘ক্ষেতে ফসল উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। এতে যে পরিমাণ ফসল উৎপাদন হয়েছে তাতে ৫০ হাজার টাকাও বিক্রি করতে পারবো না।’
শাহজাহান মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গাছে যখন ফুল-ফল ধরতে শুরু করেছে তখন থেকেই গাছগুলো রোদের তাপে শুকিয়ে গেছে। ক্ষেতে মোটর দিয়ে পানি সেচ দিয়েও অধিকাংশ গাছ বাঁচাতে পারিনি। চীনাবাদাম চাষ করেছি, তিনভাগের দুইভাগই শুকিয়ে গেছে। এছাড়াও মুগডাল চাষ করেছি তাও লোকের অভাবে ক্ষেত থেকে তুলেতে পারিনি। এ বছর যে টাকা খরচ করে ফসল চাষ করেছি তার প্রায় সব টাকাই আমার লোকসান হয়েছে।’
বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) এস এম বদরুল আলম বলেন- ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পরামর্শ দিয়েছি। কৃষকদের ওই তালিকা অনুযায়ী বরাদ্দকৃত সরকারি বিভিন্ন প্রণোদনা দেয়া হবে। যাতে করে তারা ক্ষতিটা পুষিয়ে নিতে পারেন।’
বরগুনায় এ বছর রবি মৌসুমে ৫১ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও জেলায় মোট জমি আবাদ হয়েছে ৫৬ হাজার ৮৩৬ হেক্টর। তবে লক্ষ্যমাত্রার থেকে আবাদের পরিমাণ বেশি হলেও তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ফসল উৎপাদনে লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।