শ্রীবরদী সীমান্তে চোরাচালান, আইনশৃঙ্খলার অবনতি

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২০, ০৫:৪২ পিএম

ছবি: খোরশেদ আলম
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্ত পথে চোরাচালান আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে এ উপজেলার সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতি হয়েছে। জানা গেছে, স্থানীয় চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বালিজুড়ি, কর্নঝুড়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ভারত থেকে চোরাই পথে মাদক, গাঁজা, ইয়াবা, হিরোইন, মোটরসাইকেল, গরুসহ ভারতীয় নিষিদ্ধ ঘোষিত পণ্য আমদানি করে আসছে।
এসব পণ্য আমদানি করে স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে অবাধে বাজারজাতের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করে আসছে। স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, সীমান্তের বিভিন্ন হাট -বাজারগুলোতে ভারতীয় চোরাই গরুসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত পণ্য অবাধে বেচা-কেনার পাশাপাশি চলছে জমজমাট হুন্ডি ব্যবসা।
অভিযোগ রয়েছে, এসব চোরাকারবারী ও হুন্ডি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে থানা পুলিশ, সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবিসহ বিভিন্ন সংস্থার নাম ভাঙিয়ে নিয়মিত বখরা আদায় করছে কর্নঝুড়া গ্রামের জনৈক মাহাবুবুর রহমান বিপ্লব।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র জানায়, ভারত থেকে চোরাই গরু নেমে আসার সাথে সাথে মাহাবুবুর রহমান বিপ্লবের মাধ্যমে বাজারের ইজারাদারের কাছ থেকে গরু ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদ সংগ্রহ করে অবৈধ গরু বৈধতা দেয়া হচ্ছে। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তে অবাধে চলছে জমজমাট চোরাচালানীর ব্যবসা। এ সীমান্তে চোরাচালানী বৃদ্ধি পাওয়ায় বিএসএফএর গুলিতে মাঝে মধ্যেই ঘটছে সীমান্ত হত্যা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, বেশ কয়েকজন চোরাকারবারী নিখোঁজও রয়েছে। ফলে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে।
সিংগাবরুনা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন বলেন, চোরাকারবারীদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিজিবির সক্ষতা দেখে ভয়ে কেউ প্রতিবাদ বা মুখ পর্যন্ত খুলতে সাহস পায় না। আবার কেউ মুখ খুললে উল্টো চোরাকারবারিদের দেয়া মিথ্যা মামলার আসামী হয়ে হয়রানীর শিকার হতে হয়। গত ২৫ জুলাই গ্রামবাসীরা বগুলাকান্দি গ্রামের সমর আলীর বাড়ি থেকে ভারতীয় ৪টি চোরাই গরু উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদে জিম্মায় রাখেন। পরে ইউনিয়ন পরিষদ গরু ৪টি থানা পুলিশে দেন। এদিকে ওই ভারতীয় ৪টি চোরাই গরুর ক্রয় বিক্রয়ের রশিদ দেন কর্নঝুড়া বাজারের ইজারাদার।
এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরে সিংগাবরুনা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কমান্ডার মো. নুরুল ইসলামসহ গ্রামবাসীরা ঘটনার বিচারের দাবিতে শেরপুরের পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
শ্রীবরদী উপজেলার কর্নঝুড়া বিজিবি ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার মাহমুদুল হাসান বলেন, আমি এক সপ্তাহ আগে এই ক্যাম্পে যোগদান করেছি। চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির পক্ষ থেকে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তিনি এখানে আসার পূর্বে গত ২ মাসে ৫টি চোরাই গরু ও ৩টি মাদক মামলা হয়েছে।