চাঁদে যাওয়া সম্ভব তবুও হান্ডিয়ালে নয়!

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২০, ০১:২৪ পিএম

বড় বেলাই গ্রামের লাওদারা জোলার ওপর বাঁশের সাঁকো। ছবি: প্রতিনিধি।

বড় বেলাই গ্রামের লাওদারা জোলার ওপর বাঁশের সাঁকো। দুর্ভোগ চরমে। ছবি: প্রতিনিধি।
‘মাননীয় স্পিকার চাঁদে যাওয়া সম্ভব, কিন্তু আমার হান্ডিয়ালে যাওয়া সম্ভব নয়’! জাতীয় সংসদ অধিবেশনে এমন বক্তব্য দিয়েছিলেন পাবনা-৩ (চাটমোহর, ভাঙ্গুরা, ফরিদপুর) আসনের তৎকালীন (১৯৯৬-২০০১) সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজি উদ্দিন খান। এরপর কেটে গেছে দুই যুগ। গোটা বাংলাদেশই পাল্টে গেছে। শহরের সব সুবিধা চলে যাচ্ছে গ্রামে। মহাকাশ জয় করেছে বাংলাদেশ, চাদে যাওয়ার পরিকল্পনাও চলছে। তবে হান্ডিয়াল এখনও সেই দুর্গমই রয়ে গেছে।
চলনবিল অধ্যুষিত অবহেলিত জনপদ পাবনার চাটমোহর উপজেলা। আর চাটমোহরের প্রত্যন্ত অঞ্চল হান্ডিয়াল ইউনিয়ন। ‘ঐতিহাসিক’ সেই হান্ডিয়ালে যোগাযোগ সুগম করার জন্য নানা ফাইল চালাচালি করে চাটমোহর-হান্ডিয়াল-মান্নাননগর রাস্তার কাজ পাশ করাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন ওয়াজি উদ্দিন খান।
তার বদৌলতে ২০১৮ সালে নির্মাণ শেষে চালু হয় চাটমোহর-মান্নাননগর সড়ক। সড়কটির নামকরণও করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক এমপি ওয়াজি উদ্দিন খানের নামে। হান্ডিয়ালের অবহেলিত গ্রাম বড় বেলাই, হাসুপুর, কেশবপুর, ঘোষ বেলাই, দাস বেলাই। ৫/৬টি গ্রামের প্রায় ১০/১২ হাজার মানুষ প্রতিদিন পারাপার হয় বড়বেলাই কাটাখালী লাওদারা বাঁশের সাঁকো দিয়ে। সাইকেল, ভ্যানও চলাচল করে ওই সাঁকোর ওপর দিয়ে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নে রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ কালভার্ট নির্মিত হলেও সরকারি কোনো দপ্তরে উন্নয়নে নাম নেই হান্ডিয়াল কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বড়বেলাই-সুলতানপুর রাস্তার।
বড় বেলাই গ্রামের মেছের আলী জানান, আমার বয়স এখন ৭৫ বছর। ছোট বেলা থেকেই লাওদারা জোলা গামছা পরে পার হয়ছি। তারপর বাঁশের চারাট। ভোটের সময় ব্রিজ আর রাস্তা করে দিব্যার কথা কয়্যা ভোট লিছে, কিন্তু ওই পরযন্তই’।
[caption id="attachment_194105" align="aligncenter" width="778"]
স্কুল ছাত্রী নাদিরা জানায়, বর্ষার সময় পানি বেশি থাকলি ভোট নৌকায় পার হই। আর খরার সময় চারাটে। মাঝে মাঝে ভয়ও করে। অনেক ছোট- ছোট ছেলে মেয়েরাও স্কুলে যায়। তারা ভয় পায়।
চাটমোহর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইসহাক আলী মানিক জানান, ১৯৮০ সালে চাটমোহরে আসার আগ পর্যন্ত যেমন দেখেছি এখনও সেই রকমই দেখছি লাওদারা জোলা আর রাস্তা। চাটমোহর উপজেলার অনেক জায়গা উন্নয়নে বদলে গেলেও বড় বেলাই গ্রামের লাওদারা জোলার ওপর ব্রিজ হয়নি। এখনও ওই সাঁকোর ওপর দিয়ে পার হয়ে যে রাস্তায় উঠতে হয় সে রাস্তাও পাকা হয়নি।
ইসহাক আলী মানিক দাবি করেন, আমার নিজস্ব এলাকা হিসেবে নয় হান্ডিয়াল ইউনিয়নের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবেও আমি চাই দ্রুত লাওদারা জোলার ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণ এবং বড়বেলাই-সুলতানপুর রাস্তাটি পাকাকরণ করা হোক।
হান্ডিয়াল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাকিবিল্লাহ বলেন, সংসদ সদস্য মহোদয়ের কাছে আমরা প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে। আশা করি খুব দ্রুতই একটা সু-খবর পাব।