প্রতারণার নানা কৌশল অসাধু চা পাতা ব্যবসায়ীদের

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:১৯ পিএম

প্রতারণার নানা কৌশল অসাধু চা পাতা ব্যবসায়ীদের। ছবি: সংগৃহীত

প্রতারক, নকলবাজ, চোরাকারবারি, অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী যেই হোক না কেন তারা নানা কৌশলে ভোক্তাদের সাথে প্রতারণা- জোচ্চুরি করবেই। কখনো চোরাইপথে ভোগ্যপণ্য এনে বিক্রি করে, আবার কখনো অন্যদেশের প্যাকেট বানিয়ে তাতে নিম্নমানের পন্য ঢুকিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। তেমনই শ্রীমঙ্গলে কিছু অসাধু চা ব্যবসায়ীর সন্ধান পাওয়া গেছে। তারা বেশ কিছুদিন ধরেই নানাভাবে সাধারণ ভোক্তাদের সাথে প্রতারণা করে আসছিল নিম্নমানের চা পাতা বিক্রি করে। এসব প্রতারক ব্যবসায়ীরা শুধু দেশীয় বিভিন্ন নামী দামী ব্র্যান্ডের নকল চা প্যাকেট ও বাজারজাত করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি। এরা প্রতিবেশি দেশ ভারতের কলকাতার ঠিকানা ব্যবহার করেও চা পাতা প্যাকেটজাত করে বিক্রি করছিল। তবে চা বোর্ডের এক ভ্রাম্যমাণ আদালত সেখানে অভিযান চালিয়ে ৭টি চায়ের গুদাম সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছেন।
এই ভ্রাম্যমান আদালতের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের উপসচিব ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ রুহুল আমীন। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) এই অভিযান পরিচালনাকালে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে আসা চোরাই চা বিক্রয়, ফিনলেসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্যান্ডের নকল মোড়ক প্রিন্ট করে দুর্গন্ধযুক্ত নিম্নমানের চা ভরে বিক্রয়, নিলাম বহির্ভূত অবৈধ চা মজুদ, চা বোর্ডের বিডার ও ব্লেন্ডার লাইসেন্স না নিয়ে অনুমোদনবিহীন ব্র্যান্ডে চা বিক্রয়ের অপরাধে শ্রীমঙ্গলের তানভীর টি হাউজে অভিযান চালিয়ে ৮ বস্তা নকল চায়ের মোড়ক জব্দ এবং ৭টি চায়ের গুদাম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পরিচালিত এ অভিযান সম্পর্কে মোহাম্মাদ রুহুল আমীন ভোরের কাগজকে বলেন, ‘তানভীর টি হাউজ বেশ কিছু জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের নকল মোড়কে নিম্নমানের অবৈধ চা ভরে বিক্রি করছিল। এর ফলে ভোক্তারা প্রতারিত হচ্ছে এবং সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অবৈধ চা ব্যবসা বন্ধে সারাদেশে চা বোর্ডের অভিযান চলমান থাকবে। চা বোর্ডের বিপণন কর্মকর্তা আহসান হাবিব এবং শ্রীমঙ্গল থানার পুলিশ সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত: এর আগে চট্টগ্রামের বিভিন্নস্থানে এভাবে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ম্যাজিষ্ট্রেট রুহুল আমীন বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে জরিমানা, ক্ষতিকর চা পাতা ধ্বংস, কয়েকটি গুদামও সীলগালা করে দিয়েছেন।
এর আগে তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অধীনে চাকরি করার সময় চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার বিভিন্নস্থানে অসাধু ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি, অবৈধ দখলদার, গাছ, পাহাড়, জলাশয় ধ্বংসকারি বিভিন্ন অপরাধীর বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযান পরিচালনা করে সাধারণ জনগণের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছেন। চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড ও হাটহাজারি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালেও জনকল্যাণমুখী নানা কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে প্রসংশিত হয়েছেন। বেশ কিছুদিন আগে বাংলাদেশ চা বোর্ডের উপসচিবের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে চায়ের বাজারে নানা অনিয়ম, দুর্নীতিবাজ ও অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন। যা ইতিমধ্যেই বেশ সাড়া ফেলেছে।