আলফাডাঙ্গায় অর্ধশত বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:৩৪ পিএম

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর চরনারানদিয়া চরপাড়া এলাকায় প্রতিপক্ষের প্রায় অর্ধশত বাড়িঘর স্থাপনায় ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ। ছবি: কবীর হোসেন, আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় প্রতিপক্ষের প্রায় অর্ধশত বাড়িঘর স্থাপনায় ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর চরনারানদিয়া চরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে নতুন করে হামলার আশঙ্কায় এলাকার মানুষ বাড়িঘরের মালামাল নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের বিজয়ী চেয়ারম্যান এস এম মিজানুর রহমান ও পরাজিত প্রার্থী খালিদ মোশাররফ রঞ্জু সমর্থকদের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে বিরোধ চলে আসছে। এই বিরোধের জের ধরে ইউনিয়নের উত্তর চরনারানদিয়া গ্রামে বর্তমান চেয়ারম্যান এস এম মিজানুর রহমানের সমর্থক ইউপি সদস্য আজগার আলী পক্ষের লোকজনের সাথে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী খালিদ মোশাররফ রঞ্জুর সমর্থক কামাল মোল্যা ও আকবর মোল্যার পক্ষের লোকজনের মধ্যে সম্প্রতি কয়েক দফা সংঘাত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার ভোররাতে ইউপি সদস্য আজগার আলী’র পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষ কামাল মোল্যা ও আকবর মোল্যার পক্ষের লোকজনের বাড়ি ঘরে চড়াও হয়। বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শতাধিক দুর্বৃত্ত কয়েক ঘন্টাব্যাপী হামলা চালায়। এ সময় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দৌঁড়ে পালিয়ে রক্ষা পেলেও তাদের বাড়িঘরে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামজুড়ে ধ্বংসের চিহ্ন। ঘরের টিনেরচালা, বেড়া, কুপিয়ে ছিন্নভিন্ন করা হয়েছে। গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে জানালা-দরজা। বসতঘর, দোকান, রান্নাঘর, গোয়ালঘর, কোনো কিছুই বাদ যায়নি নারকীয় হামলা থেকে। অক্ষত নেই ঘরের কোনো জিনিসপত্র। একদিন আগের সাজানো-গোছানো সংসার ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।
এছাড়া লুটে নেয়া হয় নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, কালার টিভি, ফ্রিজ, মোবাইল ফোন, গোয়ালের গরু, দোকানের মালামালসহ দামী জিনিসপত্র। অর্ধশত বাড়িঘরে ভাংচুর লুটপাটের মাধ্যমে সর্বমোট ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ প্রায় কোটি টাকা বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আজগার আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘তার পক্ষের লোকজনের বাড়িতে প্রতিপক্ষ প্রথম হামলা করেছে। এ-র আগেও প্রতিপক্ষের লোকজন তার ভাইকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেছে। এরপর তার ছেলে ও ভাতিজাকে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালানোর চেষ্টা করে।’
রোববার সকাল ১০টায় আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আবু তাহের ভোরের কাগজকে জানান, ‘ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবেলায় পুলিশ সর্বদা তৎপর আছে। এখনও কোন পক্ষের লিখিত অভিযোগ পায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।