এনজিওর ঋণ পরিশোধ করে একমণ দুধ দিয়ে গোসল

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৩, ১০:২১ পিএম

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঘবের ইউনিয়নের জাংগালিয়াকান্দায় গরু বিক্রি করে এনজিওর ঋণ পরিশোধ করে একমণ দুধ দিয়ে গোসল করেছেন এক রাজমিস্ত্রি। তার নাম শহিদুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিকালে জাংগালিয়াকান্দা গ্রামের নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় জনসম্মুখে দুধ দিয়ে গোসল করে তিনি ঋণমুক্তির ঘোষণা দেন। এসময় তিনি শপথ করেন জীবনে আর কোনো দিন সমিতি বা এনজিও থেকে ঋণ নিবেন না। এমনকি কেউ যেন এনজিও থেকে ঋণ না নেয় সে বিষয়েও তিনি জনসাধারণকে উৎসাহিত করেন। এর আগে তিনি ঋণ মুক্ত হতে তার গরু বিক্রি করেন।
জানা যায়, উপজেলার জাংগালিয়াকান্দা এলাকার আব্দুল কাদেরের ছেলে রাজমিস্ত্রি শহিদুল ইসলাম এক বছর আগে স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। ঋণের ওই টাকা সাপ্তাহিক কিস্তিতে পরিশোধ করার কথা থাকলেও তিনি তা নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করতে পারছিলেন না। এরফলে ওই এনজিও’র কর্মকর্তাদের চাপের মুখে পড়ে ঘরের হাস-মুরগি ও ডিম বিক্রি করে কিস্তি দিয়েও ঋণ পরিশোধ হচ্ছিল না।
এদিকে, রাজমিস্ত্রির নিয়মিত কাজ না থাকায় তিন সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল তার। এছাড়া তিনি অনেকটা অসুস্থ, হার্টের রোগী। নিয়মিত কাজে যেতে পারেন না। এনজিও’র ঋণের কিস্তির চাপে তার কাজকর্মেও মন বসছিল না।
অনেকটা অসহায় হয়ে সিদ্ধান্ত নেন পালের গরুটি বিক্রি করে দিয়ে ঋণ পরিশোধ করবেন। পরে তিনি দুধ দিয়ে গোসল করে শপথ নেবেন জীবনে আর কোনোদিন ঋণ বা সুদে টাকা ধার করবেন না। এমন সিদ্ধান্তে মঙ্গলবার বিকালে নিজ বাড়ির উঠানে বড় একটি পাতিলে একমণ (৪০ লিটার) দুধ দিয়ে প্রকাশ্যে গোসল করে ঋণমুক্তির ঘোষণা দেন। এসময় শহিদুল ইসলামকে দেখতে তার বাড়িতে লোকজন ভিড় শুরু করে।
শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করে কষ্ট করে সংসার চালাই। সংসারে চালাতে একটি এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করতে পারছিলাম না। কিন্তু ওই এনজিও থেকে কিস্তি পরিশোধে খুব চাপ ছিল। তাই পালের গরু বিক্রি করে ঋণমুক্ত হয়ে দুধ দিয়ে গোসল করি।