খুলনায় মেয়রপ্রার্থী ৭, কাউন্সিলর পদে ১৯৫

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৩, ০৯:৫৭ এএম

ছবি: সংগৃহীত
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ জন, কাউন্সিলর পদে ১৪৯ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ৪২ পদের মধ্যে মোট ১৯৫ জন এ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এসব প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর নূরনগর এলাকায় অঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে আসেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দলীয় মেয়রপ্রার্থী আলহাজ তালুকদার আব্দুল খালেক। পরে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিনের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি কাজী আমিনুল হক, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা ও খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুজিত অধিকারী। স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মুসফিকুর রহমানসহ ৫ জন।
তালুকদার আব্দুল খালেক উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে কাজ করে যাচ্ছেন। এই নির্বাচনে খুলনাবাসী আমাকে বিজয় করলে মাদকমুক্ত নগরী উপহার দিতে চাই। তিনি বলেন, নির্বাচন হবে সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী। সংবিধানের বাইরে আর কোনোদিন এই দেশে নির্বাচন হবে না। তাই একজন প্রার্থী হয়ে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীকেই দুর্বল মনে করি না।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কোন দল এলো আর না এলো তাতে নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে জনপ্রিয়তা যাচাই করার জন্য এ সিটি নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের আংশ নেয়া প্রয়োজন ছিল। তাহলে ওই দলগুলো বুঝতো জনগণ তাদের চায় কি চায় না।
তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, এটা রাজপথ নয়, নির্বাচনের মাঠে এসে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে হবে। সিটি নির্বাচনে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ ভোটার কেন্দ্রে ভোট দিতে আসবেন বলেও আশা করছেন তালুকদার আব্দুল খালেক।
বেলা সাড়ে ১১টায় নির্বাচন ভবনে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিনের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এস এম মুশফিকুর রহমান। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৮ সালে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে মেয়র পদে নির্বাচনে করেছি। সেই নির্বাচনে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বুঝতে পেরেছি যে, সাধারণ মানুষ মনে করে আওয়ামী লীগের বি-টিম হচ্ছে জাতীয় পার্টি। সেই কারণে এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমেছি।
বেলা ২টায় আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে আসেন আগুয়ান-৭১ মনোনীত তরুণ মেয়র প্রার্থী আগুয়ান-৭১ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী। পরে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক নীতিমালা প্রণয়ন, জাতীয় নির্বাচনে ব্যালট অথচ এই নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার, বিগত নির্বাচনগুলোর অস্বচ্ছতা এবং মাঠে ভোটারদের জনমত নিয়ে দেখা গেছে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে জনমনে তীব্র শঙ্কা রয়েছে। তিনি আগুয়ান-৭১ তরুণদের পক্ষ থেকে ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এবং নির্বাচনে কারচুপি রুখতে জনগণকে সোচ্চার হতে আহ্বান জানান।
দুপুরের পর মনোনয়নপত্র জমা দেন খুলনা জাকের পার্টির নেতা এস এম সাব্বির হোসেন। এর আগে মেয়র পদে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির দলীয় প্রার্থী মাওলানা আব্দুল আউয়াল, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও খুলনা জেলার সভাপতি দলীয় প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু ও স্বতন্ত্র সৈয়দ কামরুল ইসলাম।
কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন বলেন, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদান শেষ হয়েছে। প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় প্রার্থীসহ ৫ জনকে আসতে বলা হয়েছে। প্রত্যেকে সেই অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের প্রচার-প্রচারণা সামগ্রী অপসারণের কথা বলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কেসিসি নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৮ মে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। আগামী ২৫ মে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন, ২৬ মে প্রতীক বরাদ্দ ও ১২ জুন ভোটগ্রহণ করা হবে।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার নগরীর শিল্পাঞ্চল খালিশপুর এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখার মেয়র প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল।