গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা, দাম বেশি

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৪০ এএম

ছবি: সংগৃহীত
সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে আফিয়া কবীর বর্ণ নামে এক শিশু। যশোর শহরের এইচএমএম রোডে যশোর ক্লথ স্টোরে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদের পোশাক কিনতে এসেছে সে। দুই-একটি পোশাক দেখতেই তার নজর আটকে গেল নুড কালারের একটি পোশাকে। মায়ের কাছে বায়না ধরে এ পোশাকটি তার চাই-ই-চাই। মেয়ের বায়না মেটাতে সাড়ে চার হাজার টাকায় পোশাকটি কিনে দিলেন মা তানিয়া আলম। পোশাকটি পেয়ে আফিয়া খুব খুশি। শুধু শিশু আফিয়া নয়, পছন্দের পোশাক কিনতে প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে মার্কেটগুলোতে ভিড় করছেন নানা বয়সি মানুষ।
তবে অভিযোগ রয়েছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর পোশাকের দাম বেড়েছে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। তারপরও সাধ্যের মধ্যে পছন্দের পোশাক কিনছেন ক্রেতারা।
গত বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, যশোরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়কের বেস্ট চয়েজ, কাপুড়িয়া পট্টির মনষা বস্ত্রালয়, রং ফ্যাশন, শাড়ি ঘর, জেস টাওয়ার, তাঁত কুটির, বিদিশা, প্রাইম, বাটা, এপেক্স ও লেডিস কর্নারসহ বিভিন্ন অভিজাত বিপণীতে ঈদের কেনাকাটা পুরোদমে শুরু হয়েছে। মূলত ঈদ যতো ঘনিয়ে আসছে বিক্রিও তত বাড়ছে। ঈদ উপলক্ষে শহরের প্রতিটি বিপণীবিতানে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। এ জন্য প্রশাসনও রয়েছে সজাগ। ক্রেতা বিক্রেতারা যাতে নির্বিঘ্নে কেনাবেচা করতে পারেন সে জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
যশোর কাপুড়িয়া পট্টিতে ঈদের মার্কেট করতে আসা যশোর সদরের এড়ান্দার বাসিন্দা শাহানাজ মুন্নি জানান, স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে পছন্দসই পোশাক কিনতে মার্কেটে এসেছেন তিনি। এখন মার্কেট ঘুরে ঘুরে পোশাক দেখছেন। শার্শা উপজেলার এক দম্পতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যশোর কালেকটরেট চত্বরে ঈদের পোশাক কিনতে এসেছেন তারা। তবে সবকিছুর দাম বাড়তি। একই সঙ্গে ভিড় রয়েছে। তাই একটু আক্ষেপ নিয়ে তারা বলেন, ‘আমাদের সাধ আছে, কিন্তু সাধ্য নেই। তবুও ঈদ বলে কথা। যেভাবেই হোক পরিবার-পরিজনের জন্য নতুন জামা কাপড়তো কিনতেই হবে।’ ব্লুজ-এর স্বত্বাধিকারী খায়রুজ্জামান সুজন বলেন, ফ্যাশন সচেতন তরুণরা এবার ঈদ উপলক্ষে আধুনিক ডিজাইনের পোশাক পরতে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। তাই ছেলেদের পোশাক ট্রেন্ডে কাটিং ও প্যাটার্নে পরিবর্তন এনেছি। একই সঙ্গে ফ্যাশনের ক্ষেত্রে পাঞ্জাবিরও বিকল্প নেই। প্রতিবারের মতোই পাঞ্জাবির পসরা রয়েছে। সেই সঙ্গে দেশি বিদেশি জিন্স প্যান্ট, টিশার্ট, নানা ডিজাইনের শার্ট রয়েছে।
খায়রুজ্জামান সুজন আরো বলেন, দীর্ঘদিন ব্যবসার পরিস্থিতি খুবই খারাপ ছিল। করোনাকালীন অধিকাংশ ব্যবসায়ী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার কেনাবেচা ভালো হবে বলে আশা করেন তিনি।
বড় বাজারের টম এন্ড জেরির স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলিজা বলেন, ‘এবার সব কিছুর দাম অনেক বেশি। আমরা কিনে আনছি চড়া দামে, এরপর আমাদের লাভ, কর্মচারীদের বেতন, বোনাস, অন্যান্য খরচতো আছেই। একটু লাভ না রাখলে আমরাও অচল হয়ে যাব।’
বেবি ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী তারিকুজ্জামান বলেন, ঈদকে ঘিরে বিক্রি এখন পর্যন্ত সন্তোষজনক। যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার জানান, মানুষ যাতে স্বাচ্ছন্দে কেনাকাটা করে বাড়ি ফিরতে পারে, সেজন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।