সিংগাইর-মানিকনগর সড়ক সংস্কার ধীরগতি

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৩, ০৪:৪০ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ

ছবি: ভোরের কাগজ
চলাচলে ধুলা, খাবারের মধ্যে ধুলা এমনকি রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় শরীরে পড়ছে ধুলার আবরণ। নিঃশ্বাসের সাথে ফুসফুসে ঢুকছে ধুলা-বালি। লোকজন হচ্ছে নানা রোগে আক্রান্ত। এমনি অবস্থা সংস্কারাধীন সিংগাইর-মানিকনগর সড়কের দু’পাশের ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও চলাচলকারী লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীর। সর্বত্রই যেন ধুলার রাজত্ব।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ৪ বছর আগে ১২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯ কিলোমিটার সড়কটির সংস্কার ও উন্নয়নের কাজ হাতে নেয় উপজেলা প্রকৌশল অফিস। প্রথমে ঢাকার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেন্ডার পেয়ে ভেকু দিয়ে রাস্তা খুড়ে। এর পর আর কোনো কাজ না করে ২ বছর কাটিয়ে দেয়। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় মামলা-মোকদ্দমার পর আইনি জটিলতা কাটিয়ে পুনঃ দরপত্রে ঢাকাস্থ এমবিইএল ও সোনার বাংলা নেভিগেশন কাজ পায়। প্রায় ৪ মাস আগে প্রতিষ্ঠানটি সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করে। কিন্তু কাজের ধীর গতি হওয়ায় এবং নিয়মিত পানি দিয়ে কিউরিং না করায় ধুলা-বালিতে বিশাল এ এলাকা বসবাস করার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আলীনগর গ্রামের সেলুন দোকানদার দেলোয়ার হোসেন বলেন, সকালে ঘুম থেকে জেগে দেখি শরীরে ধুলার আবরণ পড়ে গেছে।
শায়েস্তা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওমর আলী বেপারী বলেন, সড়কের পাশে বাড়ি হওয়ায় রান্না করা ভাত তরকারিতে প্রতিনিয়ত ধুলা-বালি পড়ছে। আর সেগুলোই আমাদের খেতে হচ্ছে।
[caption id="attachment_411732" align="alignnone" width="1600"]
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন আক্তার বলেন, ধুলা-বালির কারণে বাড়িতে বসবাস করা যাচ্ছে না।
ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি টুটুন দাস বলেন, প্রতিদিন মোটরসাইকেলযোগে একাধিকবার সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। মাস্ক পড়েও ধুলা থেকে রেহাই নেই। নিঃশ্বাসের সাথে ফুসফুসে যাচ্ছে ধুলা-বালি। মাঝে মধ্যেই হয়ে পড়ছি অসুস্থ। রাস্তা বের হলেই বাড়িতে এসে গোসল করতে হয়।
সায়েস্তা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম বলেন, দীর্ঘদিন রাস্তা সংস্কার কচ্ছপ গতিতে চলায় আমি বিকল্প সড়ক ব্যবহার করছি। সিংগাইর- মানিকনগর সড়কের যাত্রীরা ধূলার কারণে পরিবহন সংকটে বিকল্প রাস্তা ব্যবহারে তিনগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে। ব্যয় হচ্ছে অধিক সময়।এ প্রসঙ্গে সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. ফারহানা নবী বলেন, দীর্ঘদিন অতিরিক্ত ধূলা-বালি নিঃশ্বাসের সাথে দেহে প্রবেশ করলে এ্যাজমা, হাঁপানি, সিওপিডি এবং ব্রংকাইটিস হতে পারে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. ফরহাদ হোসেনকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইসমাইল হোসেন ধুলা-বালিতে জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। বর্তমানে কাজের গতি সন্তোষজনক। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে।