নেত্রকোনার মদন উপজেলা ছাত্রলীগকে নিষ্ক্রিয় বলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান তালুকদার শামীমের সমর্থকদের সাথে ছাত্রলীগের আহব্বায়ক টিপু ইসলাম সোহাগের সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পৌর সদরের চৌরাস্তা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পুলিশ। এ সময় মুজিবুর রহমান নামের এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যেক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (১১ ফ্রেরুয়ারি) মদনে এসডিএফ নামের একটি প্রকল্পের অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসান অংশগ্রহণ করেন। ওই দিন নেত্রকোনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহমেদ খান সাজ্জাদুল হাসানের সঙ্গে আসেন। বিকেলে তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে শান্তি সমাবেশ করেন।

সভা শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান তালুকদার শামীম উপজেলা ছাত্রলীগ নিষ্ক্রিয় বলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানান। পরে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের সক্রিয় হতে বলেন।

এতে আহব্বায়ক টিপু ইসলাম সোহাগ গতকাল রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে পৌর সদরের চৌরাস্তার মোড়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে দেখে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। সোমবার সকালে ছাত্রলীগের আয়োজনে এক প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

এরই জের ধরে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে সোমবার সকাল থেকে দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পৌর সদরে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে দু-পক্ষের মাঝে ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এ সময় মুজিবুর রজমান নামের এক পুলিশ সদস্য আহত হয়। বিশৃঙ্খলা এড়াতে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ রয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে গালমন্দ করার বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগের আহব্বায়ক টিপু ইসলাম সোহাগ জানান,‘উপজেলা আওয়ামালীগের সাধারণ সম্পাদক মদন উপজেলা ছাত্রলীগ নিষ্ক্রিয় বলে জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের কাছে নালিশ দিয়েছে। আমরা সকালে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ডের প্রশংসার মিছিল শেষে কেন্দুয়া রোডে আসলে বিএনপির লোকজন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমাদের ওপর হামলা করেছে।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান তালুকদার শামীম জানান,‘উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের সাথে আমার কথা হয়। এ নিয়ে গতকাল (রবিবার) রাতে পৌর সভার চৌরাস্তার মোড়ে ছাত্রলীগের আহব্বায়ক আমাকে গালমন্দ করে। সোমবার সকালে তারা মিছিল শেষে আমার একজন সমর্থকে ধাওয়া দেয়। পরে এলাকাবাসীর সাথে তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।’

নেত্রকোনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহমেদ খান জানান,‘মদন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সাথে মদন উপজেলা ছাত্রলীগের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে আমার কথা হয়। বিষয়টি নিয়ে পরে আমি ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের সাথে কথা বলি। এই বিষয়টি নিয়ে আজকের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা আমার জানা নেই।’

নেত্রকোনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল আলম শাওন জানান,‘ মদন উপজেলার ছাত্রলীগ খুবই দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। আর মদনে যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে এটা তাদের ব্যক্তিগত আক্রোশ।’

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান জানান,‘ দু-পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। এ সময় আমার এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’