গাইবান্ধায় সার্কাসের হাতির তাণ্ডব, ৭ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২২, ১২:৩৮ পিএম

রবিবার গাইবান্ধা সদরে দিনভর তাণ্ডবের সাত ঘণ্টা পর একটি সার্কাসের হাতিকে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ছবি: ভোরের কাগজ
গাইবান্ধা সদরের তিনটি ইউনিয়নে রবিবার দিনভর তাণ্ডবের সাত ঘণ্টা পর সার্কাসের একটি হাতিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে মাউথ। রবিবার তিনটি ইউনিয়নের অন্তত ২৫টি গ্রামে হাতিটি দাঁপিয়ে বেড়ায়। এসময় হাতিটি বেশ কয়েকটি মাঠের বোরো ফসলের ক্ষতি করে।
রবিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে গাইবান্ধা থেকে হাতিটিকে গাইবান্ধা-নাকাইহাট সড়ক দিয়ে গোবিন্দগঞ্জের নাকাইহাটের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। এর মধ্যেই সকাল নয়টার দিকে হাতিটি সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বালুয়াবাজার এলাকায় পৌঁছে।
এসময় বালুয়া বাজারে কয়েকজন তরুণ হাতিটিকে বিরক্ত করায় হাতিটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন মাউথ।
এরপর হাতিটি সড়ক থেকে উঠতি বোরো ধানের জমিতে নেমে পড়ে। একপর্যায়ে হাতিটি মাউথকে ছিটকে ফেলে দেয়। পরে মাউথ হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
হাতিটি বালুয়া বাজার এলাকা থেকে ধানী জমির ভেতর দিয়ে দ্রুত ছুটে চলে। পেছনে মাউথসহ হাতির সঙ্গে আসা পাঁচজন দৌঁড়াতে থাকে। কিন্তু তারা হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হন।
এভাবে হাতিটি রামচন্দ্রপুর, একই উপজেলার সাহাপাড়া ও বল্লমঝাড় ইউনিয়নের আন্তত ২৫টি গ্রামের বোরো ধানের ক্ষতি করে। এসময় শত শত উৎসুক জনতা আশপাশ থেকে হাতির তাণ্ডব দেখতে ভিড় জমায়।
হাতিটির ক্ষতি না করতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ মানুষকে শান্ত থাকতে মাইকিং করে।
বিকেলে সরেজমিনে বল্লমঝাড় ইউনিয়নের খামার বল্লমঝাড় গ্রামে গিয়ে গেছে, উঠতি বোরো জমিতে হাতিটি এদিক সেদিক যাওয়ার চেষ্টা করছে। পেছনে মাউথ ও তার সহযোগিরা হাতিটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
চারদিকে শত শত মানুষ হাতির তাণ্ডব দেখছে। বল্লমঝাড় ইউপি চেয়ারম্যান, পুলিশ ও গ্রাম পুলিশ মানুষকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেন। তারা হাতির কাছে না যেতে মাইকিং করছেন।
এদিকে স্থানীয়রা বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানান।
এরপর হাতিটি নিয়ন্ত্রণ করতে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমান মুঠোফোনে ঢাকাস্থ প্রধান বন সংরক্ষককে জানান। তবে বন বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই বিকেলে খামার বল্লমঝাড় গ্রামে হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয় মাউথ।
প্রায় সাত ঘণ্টা চেষ্টার পর হাতিটি মাউথের নিয়ন্ত্রণে আসে। বিকেল চারটার দিকে হাতিটিকে নিয়ে রংপুরের দিকে চলে যান মাউথ। বল্লমঝাড় ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার রহমান জানান, হাতিটির তাণ্ডবের ফলে ফসলের ক্ষতিসাধন হয়েছে। তবে মানুষ বা ঘরবাড়ির কোনোরূপ ক্ষতি হয়নি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাছুদার রহমান সরকার বলেন, সার্কাসের হাতি সাধারণত এমন আচরণ করে না। হাতিটি হয়তো বেশি ক্ষুধার্ত ছিল। মাউথের মাথায় আঘাত করার কারণে হাতিটি এমন আচরণ করেছে।
এদিকে চাঁদা তোলার বিষয়টি অস্বীকার করে হাতির মাউথ শাকিল ইসলাম বলেন, হাতি দেখে অনেকে খুশি হয়ে ১০-২০ টাকা দেয়। আর সেই টাকা হাতির পেছনে খরচ করা হয়।