সম্প্রীতি মৈত্রীর আহ্বানে রাজধানীতে শরৎ উৎসব

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪৭ পিএম

সহিংসতার বিপরীতে শিল্পীরা গাইলেন সম্প্রীতি, মৈত্রী ও ভালোবাসার গান। ছবি : ভোরের কাগজ
বৃষ্টি আর রোদের লুকোচুরি খেলা, নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা - এমন প্রকৃতিই মনে করিয়ে দেয় শরতের কথা। তাই তো সত্য ও সুন্দরের এ ঋতুর বন্দনা করলেন রাজধানীর শিল্পীরা। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল শরৎ উৎসব।
সকাল সাড়ে ৭টায় যন্ত্রসংগীতশিল্পী মো. ইউসুফ খানের সরোদ বাদনে শুরু হয় এ উৎসব। তারপর কথা, কবিতা ও গানের মাধ্যমে শুরু হয় শরৎ বন্দনা।
গণ-অভ্যুত্থানে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশজুড়ে এখনো যে সহিংসতা চলছে, তার বিপরীতে শিল্পীরা গাইলেন সম্প্রীতি, মৈত্রী ও ভালোবাসার গান।
সুরবিহারের শিল্পীরা শোনান ‘ওগো শেফালি বনে মনের কামনা’। সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা পরিবেশন করেন রবীন্দ্রসংগীত ‘দেখো দেখো শুকতারা আঁখি মেলে চায়’ ও নজরুল সংগীত ‘এ কী অপরূপ রূপে মা তোমায়’ গান দুটি। সীমান্ত খেলাঘর আসরের শিশুরা পরিবেশন করে রবীন্দ্রনাথের ‘আজি ধানের ক্ষেতে রৌদ্র ছায়ায়’ গানটি।
শিল্পবৃত্তের শিশুরা পরিবেশন করে দলীয় আবৃত্তি প্রযোজনা ‘শরৎ রাণী’। দলীয় সংগীত পরিবেশনায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী পরিবেশন করে ‘আমার রাত পোহালো শারদ প্রাতে’। নির্ঝরণী সংগীত একাডেমি পরিবেশন করে ‘এসো হে সজল শ্যামল ঘন দেয়া’। সমস্বরের শিল্পীরা শোনায় ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’।
এদিন একক সংগীত পরিবেশন করেন জ্যেষ্ঠ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ফাহিম হোসেন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান প্রিয়াংকা গোপ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান অনিমা রায়, শিল্পী তানভীর আলম সজীব, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, স্নিগ্ধা অধিকারী, নবনীতা জাইদ চৌধুরী অনন্যা, ফেরদৌসী কাকলী ও রোমানা আক্তার।
দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন স্পন্দন, ধৃতি নর্তনালয়, বাংলাদেশি একাডেমি অব ফাইন আর্টস, নৃত্যাক্ষ, কথক নৃত্য সম্প্রদায়ের শিল্পীরা। বাচিকশিল্পী রফিকুল ইসলাম আবৃত্তি করেন কবি জীবনানন্দ দাশের ‘এখানে আকাশ নীল’ কবিতাটি।
এরপরেই শুরু শরৎ কথন। এ পর্বে অংশ নেন চারুশিল্পী অধ্যাপক সুশান্ত অধিকারী, বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সহসভাপতি অধ্যাপক ড. নিগার চৌধুরী। শরৎ উৎসবের ঘোষণা পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট।
দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে তিনি বলেন, চিরন্তন শারদীয় উৎসবে এবার মিশে আছে বেদনার সুর। আমরা সশ্রদ্ধভাবে স্মরণ করি নবপ্রভাতের স্বপ্নবহ ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে আত্মাহুতি-দানকারী শহিদদের, ব্যথিত চিত্তে লক্ষ্য করি ঘৃণা অসহিষ্ণুতা ও হিংসার বিস্তারে দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু। বৈষম্যহীন মুক্ত স্বাধীন সম্প্রীতির সমাজের স্বপ্নবহ আন্দোলন জীবনে নানাভাবে পল্লবিত হউক, সেই প্রত্যাশাও মিশে থাকে শরৎ-আবাহনে।