রাজধানীতে চলছে গণপরিবহণ সংকট

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৪, ১০:৪২ এএম

ছবি: ভোরের কাগজ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সরকার পতনের একদফা দাবিতে আজ (রবিবার ৪ আগস্ট) থেকে সারাদেশে ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এদিন বেলা ১১টায় রাজধানীসহ সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বিক্ষোভ ও গণসমাবেশ পালিত হবে।
ঘোষিত এ বিক্ষোভ কর্মসূচির প্রভাব পড়েছে রাজধানীর সড়কে। এদিন সকাল থেকেই সড়কগুলোতে গণপরিবহণ কম দেখা গেছে। যাও একটি-দুটি দেখা গেছে, তাতে ছিল যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। চলছে শুধু রিকশা-সিএনজি। অলিগলিগুলো ও সড়কে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা থাকলেও অন্যদিনগুলোর চেয়ে কম। তবে তারা ভাড়া হাকাচ্ছেন ইচ্ছামতো। মানুষজনের চলাচলও কম।
এদিকে সকাল থেকে রাজপথে কয়েকটি বাসের দেখা মিললেও, এতে হুমড়ি খেয়ে পড়তে দেখা গেছে যাত্রীদের। গণপরিবহন সংকটে ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী যাত্রী, জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ এবং হাসপাতালগামী রোগী ও স্বজনরা।
রবিবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর কলেজ গেট, শিশুমেলা, আগারগাঁও, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামটর, কাকরাইল, মৎস্য ভবন এলাকা ঘুরে সরেজমিনে গণপরিবহন সংকটের এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে বিভিন্ন সিগনাল ও বাস স্টপেজগুলোতে যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে।
গণপরিবহন না পেয়ে অনেক যাত্রীকে দেখা গেছে রিকশা বা সিএনজি নিয়ে রওনা দিতে। অনেকে অ্যাপস ভিত্তিক পরিবহন সেবা নিচ্ছেন। এসময় অনেক যাত্রীকে বাস আসার আশায় অপেক্ষায় দেখা যায়। অনেককে আবার লেগুনায় যেতেও দেখা গেছে।
উত্তরা থেকে মৌচাকগামী আবছার কাদের একজন কাঁচামাল ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, সকাল ৭টা থেকে সড়কে ছিলাম। তেমন গণপরিবহণ নেই। রিকশা ও অটোরিকশাচালকরা বেশি ভাড়া চাচ্ছিল। প্রায় ৪৫ মিনিট পর একটি গণপরিবহণের দেখা মেলে। সেটিও ছিল যাত্রীতে পরিপূর্ণ। খুব কষ্ট করে সেটাতে উঠে পড়ি।
আরো পড়ুন: ছাত্র আন্দোলন: শনিবার যা যা ঘটেছে

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা এক যাত্রী বলেন, ভেঙে ভেঙে আমাকে আসতে হয়েছে। স্টাফকোয়ার্টারে এসে বেশ বেকায়দায় পড়ে যাই। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর একটি বাস পাই। আর তা দিয়ে রাজধানীতে ঢুকি।
সকাল ৯টায় অফিস ধরতে বের হয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয় অধিকাংশদের। শান্ত নামে এক অফিসগামী যাত্রী বলেন, খিলখেত মোড়ে এসে দেখি কোনো বাস নেই। কয়েক মিনিট অপেক্ষা করেও রাস্তায় কোনো বাস পেলাম না। দেখলাম আমার মতো অসংখ্য অফিসগামী যাত্রীরা বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে। দূরের যাত্রীদের মধ্যে কেউ কেউ বাসের আশা ছেড়ে দিয়ে সিএনজি বা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে রওনা হয়েছেন।
আলাউদ্দিন নামে এক রিকশাচালক বলেন, সারাদেশে আজ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ছাত্ররা। গণপরিবহন নাই সড়কে। যারা এই সাত সকালে অফিস যাবেন তারা পড়েছেন বিপাকে। যাত্রী সেবায় আজ ফুলটাইম সড়কে আছি। চার্জ যতক্ষণ সড়কেও ততোক্ষণ থাকবো।
উল্লেখ্য, শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেলে কোনো ধরনের ট্যাক্স প্রদান না করাসহ অসহযোগ আন্দোলন পালন করতে ছাত্র-জনতাকে একদফা নির্দেশনা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। ওইদিন কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশ থেকে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ ও গণসমাবেশ পালন করবো। তবে আঘাত এলে তা প্রতিহত করার সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখার আহ্বান রইল।