×

রাজধানী

সতর্কতা নেই বস্তিগুলোতে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২০, ০৯:৪৩ এএম

সতর্কতা নেই বস্তিগুলোতে

করোনা আতঙ্কের মধ্যেও জীবন থেমে নেই। রাজধানীর কড়াইল বস্তির এই রান্নাঘরে তিনটি গ্যাসের চুলায় রান্না হয় ৩৩টি পরিবারের। ‘সামাজিক দূরত্ব’ রক্ষার সুযোগ নেই, চেষ্টাও নেই। ছবি: ভোরের কাগজ।

   

সারা পৃথিবীতে আতঙ্ক ছড়িয়ে বাংলাদেশেও প্রভাব বিস্তার করছে করোনা ভাইরাস। সোমবার (৩০ মার্চ) পর্যন্ত ৪৯ জন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। মারা গেছে ৫ জন। ভয়াবহতার কথা চিন্তা করে আগেই সারাদেশ লকডাউন করেছে সরকার। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া চলাচল না করা, বারবার সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া, মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করাসহ দেয়া হয়েছে নানা পরামর্শ। এতসব কিছুর মধ্যেও রাজধানীর বস্তিবাসীদের মধ্যে সতর্কতার বালাই নেই। আগের নিয়মেই চলছে নিম্ন আয়ের এসব মানুষের জীবন। তাদের সুরক্ষায় নেই কোনো সরকারি- বেসরকারি উদ্যোগও। এ পরিস্থিতিতে করোনা প্রতিরোধে খেটে খাওয়া এসব মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোসহ হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এদিকে বস্তিবাসী ও ভাসমান লোক গণনায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৪ সালের শুমারি অনুযায়ী ঢাকা বিভাগে ৩ হাজারেরও বেশি বস্তিতে ১০ লাখ ৬২ হাজার ২৮৪ জন বাস করে। সারাদেশে এই সংখ্যা প্রায় সাড়ে ২২ লাখ। সুতরাং এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে করোনায় ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

সোমবার রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে গিয়ে দেখা যায়, বস্তিটির প্রবেশ পথেই মানুষের ভিড়। কেউবা জটলা বেঁধে রাস্তার উপরই আড্ডা দিচ্ছে, কেউ সড়কে ক্রিকেট খেলছে, অনেকে দোকানে মেতে উঠেছে খোঁশ গল্পে। এ সময় হাতেগোনা দুয়েকজনের মাস্ক পরা থাকলেও বেশির ভাগেরই দেখা যায়নি। করোনার প্রভাব থেকে বাঁচতে কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে তাও জানে না তাদের অনেকেই। করোনা সম্পর্কে জানতে চাইলে একটাই উত্তর, আমাদের গরীবদের উপরে আল্লাহর রহমত আছে। কিছুই হবে না। শুধু কড়াইল বস্তিই নয়, রাজধানীর কল্যাণপুর পোড়াবস্তি, মিরপুরের বেগুনটিলা বস্তি, মহাখালীর সাততলা বস্তি, ভাষাণটেক বস্তিসহ সব বস্তিরই একই চিত্র।

বস্তিবাসীরা বলছেন, ছোট ছোট টিনের ঘরগুলোতে তারা গাদাগাদি করে অনেকে থাকেন। কয়েক ঘর মিলে ব্যবহার করেন একটি চুলা, একটি টয়লেট ও একটি গোসলখানা। আবার বস্তির রাস্তাগুলো অনেক সরু হওয়ায় তাদের একজন অপরজনের শরীরের সংস্পর্শে আসতেই হয়। সুতরাং করোনা অতি দ্রুত বস্তিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে জেনেও বাধ্য হয়েই তাদের এভাবে জীবনযাপন করতে হচ্ছে। আর নিম্ন আয়ের এসব মানুষের বেশির ভাগের কোনো কাজ না থাকায় আড্ডা দিয়েই সময় পার করতে হচ্ছে। সরকারি বা বেসরকারি কোনো উদ্যোগ না থাকায় কেউ তেমন জানেনও না কি করতে হবে।

বউবাজার বস্তির বাসিন্দা বিলকিস বলেন, বস্তির একটি রুমে ৪ মেয়ে ও স্বামীকে নিয়ে থাকি। গৃহপরিচারিকার কাজ করেন পাশের টিভি গেটের একটি বাসায়। করোনার কারণে ছুটি পেয়েছেন। এখন বস্তির অন্য মহিলাদের সঙ্গে খোঁশগল্প করেই দিন কাটাচ্ছেন তিনি। বেলতলা বস্তির বাসিন্দা নূরজাহান বেগম বলেন, করোনার বিষয়ে টেলিভিশনে দেখেছি। কিন্তু ভয় পাই না। আল্লাহর রহমতে আমাদের কিছু হবে না।

একই বস্তির বাসিন্দা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দারোয়ান নুরুল হক ঢালি বলেন, অনেক জায়গায় ফ্রিতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক দেয়া হলেও আমরা পাইনি। এগুলোর দাম বেশি হওয়ায় কিনতেও পারি না। সরকারি-বেসরকারিভাবে কিছু ত্রাণ দেয়া হলেও সেটি লোক দেখানো। সব পরিবারকে দেয়া হচ্ছে না। ফলে পেটের দায়ে তারা সতর্কতা অবলম্বন করতে পারছেন না।

নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান জানান, বস্তিবাসীর বর্তমান যে অবস্থা, তাতে করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে তারা। প্রথমে তাদের বিষয়েই সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে। সরকারিভাবে বস্তিকেন্দ্রিক মনিটরিং সেল গঠন করে নজরদারি বাড়াতে হবে। স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App