শিশু সাফওয়ান হত্যাকাণ্ড
দুই আসামির বাড়িতে আগুন দিলো বিক্ষুব্ধ জনতা

গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৩৫ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামে দাদাবাড়িতে বেড়াতে এসে গত বুধবার নিখোঁজ হয় শিশু সাফওয়ান (৫)। গত বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির পেছনের একটি ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) নিহত শিশুর বাবা ইমরান সিকদার বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাসহ ৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পরে চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিকে শুক্রবার বাদ আছর নিহত শিশু সাফওয়ানের জানাজা শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা দুই আসামির বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি ইউনুস মিয়া বলেন, ‘গৌরনদী উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামে বেড়াতে এসে নিহত হয় শিশু সাফওয়ান। নিহতের বাবা ইমরান সিকদার বাদী হয়ে লোকমান চৌধুরী, রোমান চৌধুরী, মুজাম্মেল হক চৌধুরীসহ ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ মামলার এজাহারনামীয় আসামি লোকমান চৌধুরী, রোমান চৌধুরী, মুজাম্মেল হক চৌধুরী ও আমিনা বেগমকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।’
আরো পড়ুন: আলীকদমে ট্রাক-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একটি সুত্রের বরাতে তিনি আরো বলেন, ‘বিকেলে নিহত শিশু সাফওয়ানের জানাজা শেষে নিহতের স্বজন ও বিক্ষুব্ধ জনতা আসামি লোকমান হোসেন ও সরিকল ইউনিয়ন পরিষদের ৯নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মোজাম্মেল হোসেন চৌধুরীর বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। একপর্যায়ে দুটি বাড়িতে আগুন দেয়। আসামিদের গ্রেপ্তারের পর থেকেই পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। যে কারণে অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’
গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ বিপুল জানান, আগুন নেভানোর চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ জনতা বাধা দেয়। পরে প্রশাসনের সহায়তায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষণে পাকা ভবনের বাড়ি ২টির ভবন বাদে সকল আসবাবপত্র ও দরজা জানালা পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
নিহত শিশুর একাধিক স্বজন জানায়, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ লোকমান চৌধুরী, রোমান চৌধুরী ও মুজাম্মেল হক চৌধুরী ও তাদের সমর্থকরা শিশুটিকে অপহরণ করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার দুপুর ২টার দিকে স্থানীয় বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশু সাফওয়ান। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে শিশুটির দাদা বারেক সিকদার বাদী হয়ে ওই দিনই গৌরনদী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। গত বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ শেষে স্থানীয় মুসল্লিরা মান্না বেপারির বাড়ির পেছনে ডোবায় শিশু সাফওয়ানের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।