২৬১ কোটি টাকা মাফ পেয়েছেন নাসার নজরুল

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪৫ পিএম

নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত
রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ২৬১ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করিয়ে নিয়েছেন নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। জনতা ব্যাংক থেকে নেয়া ১৫৬ কোটি টাকার ঋণের বিপরীতে সুদসহ এই টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ৪১৭ কোটি টাকা। অথচ তিনি কোনো সুদই পরিশোধ করেননি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা লঙ্ঘন করে গ্রুপটির জন্য সুদ মওকুফের এই সুবিধা দেয়া হয়েছে। যদিও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, রাজনৈতিক চাপে তারা এই সুবিধা দিতে বাধ্য হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জনতা ব্যাংকের নিয়মিত ঋণের বিপরীতে সুদ মওকুফ করার কোনো সুযোগ নেই। তবে নজরুল ইসলাম মজুমদারের ক্ষেত্রে আয় খাত বিকলন করে এই সুবিধা দেয়া হয়েছে। অথচ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, ঋণগ্রহীতার মৃত্যু, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি বা প্রকল্প বন্ধের মতো কারণে সুদ মওকুফ করা যেতে পারে। নাসা গ্রুপের কারখানা সচল থাকা সত্ত্বেও এই সুবিধা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও জনতা ব্যাংক বিশেষ অনুমোদন দেয়।
২০২১ ও ২০২২ সালে এই বড় অঙ্কের সুদ মওকুফ করার পর থেকে জনতা ব্যাংক নানা সংকটে পড়েছে। নিয়ম ভঙ্গ করে সুদ মওকুফের বিষয়টি আলোচনায় আনেন জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি জাতীয় সংসদে বলেন, সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে ৪টি মূলনীতি রয়েছে, কিন্তু নজরুল ইসলাম মজুমদারের ক্ষেত্রে এসবের কোনোটি প্রযোজ্য নয়।
নাসা গ্রুপের দুই প্রতিষ্ঠানের জন্য ১৫৬ কোটি টাকার ঋণের বিপরীতে ২৬১ কোটি টাকা সুদ জমে। সুদ-আসল মিলিয়ে ৪১৭ কোটি টাকার বিপরীতে গ্রুপটিকে মাত্র ১৫৬ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। এ সুবিধা প্রদানের জন্য ২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর জনতা ব্যাংকে আবেদন করেন নজরুল ইসলাম মজুমদার, যা ২০২১ সালের মার্চে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় অনুমোদিত হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ম লঙ্ঘন করে সুদ মওকুফের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে ব্যাখ্যা তলব করলেও পরবর্তীতে আবারো ঋণ সমন্বয়ের সুযোগ দেয়া হয়।
জনতা ব্যাংকের সূত্র মতে, এ সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদ মওকুফ নীতিমালার পরিপন্থী। তাদের মতে, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে যে প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয়েছিল, সেখানে ‘কস্ট অব রিকভারি নিশ্চিত হয় না’ বলা হয়েছিল, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সুদ মওকুফ নির্দেশনার বিরোধী।
আরো পড়ুন: এবার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারতে পালানো নিয়ে যা জানালো বিজিবি
বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, নীতিমালার আলোকে ব্যাংকগুলো সুদ মওকুফ করে থাকে। তবে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা গেলে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।