ব্যাংক লুটেরাদের কঠোর শাস্তি চান ব্যবসায়ী নেতারা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি : প্রতীকী
ব্যাংক লুটেরাদের শাস্তি চান দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ব্যবসার নামে ব্যাংক থেকে অর্থ লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ আশা করেন তারা। ব্যাবসায়ীরা বলেছেন, ব্যবসার নাম করে যারা লুটপাটে জড়িয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে ব্যবসায়ী সমাজ সহযোগিতা করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার সৌজন্য সাক্ষাতে এমন কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বাধীন একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল। মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে এদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সোয়া একটা পর্যন্ত প্রতিনিধি দলটি গভর্নরের সঙ্গে কথা বলে।
ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি দলে ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান টি রহমান, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ, বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল প্রমুখ। ব্যবসায়ীদের পক্ষে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু সাংবাদিকদের বলেন, যারা অন্যায়ভাবে সম্পদ লুট করেছে, অন্যায়ভাবে সম্পদ অর্জন করেছে এবং যারা ব্যাংকগুলো লুট করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য গভর্নরকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। যারা ব্যবসার নাম করে লুটপাটে জড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে যে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার পক্ষে ব্যবসায়ীরা।
এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, আমরা দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে। লুটপাট-পাচারের বিরুদ্ধে। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ঋণের কিস্তির সময় বাড়ানোর কথা বলেছি। গভর্নরের কাছে ব্যাংকঋণের কিস্তি ৩ থেকে ৬ মাস বাড়ানোর দাবি করেছেন বলে জানান এফবিসিসিআইয়ের এ সভাপতি। তিনি বলেন, আমরা ঋণের কিস্তির সময়সীমা ৩ থেকে ৬ মাস বাড়ানোর কথা বলেছি। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তারপরও সময় না বাড়লে অনেক ব্যবসায়ী ঋণখেলাপি হয়ে যাবে। এফবিসিসিআই সভাপতি আরো বলেন, জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেছি। এ বিষয়ে গভর্নর সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়া গত ১ থেকে ২ মাসে শিল্পকারখানার ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেতন-ভাতা পরিশোধে ব্যবসায়ীদের নমনীয় সুদে ঋণ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। ডলারের বিনিময় হারের কারণে লোকসানে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। এটা নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা গভর্নরকে বলেছি। তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়ী সমাজ অর্থনীতির পক্ষে। সরকারের যে কোনো ভালো পদক্ষেপে তারা সহায়তা করবেন। বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, গভর্নরের সঙ্গে সভায় আমরা ব্যাংকিং খাতের সংস্কারে বেশি গুরুত¡ দিয়েছি। সংস্কার খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া সুদহার কমানোর বিষয়ে কথা হয়েছে। সে জন্য গভর্নর ৬ থেকে ৭ মাস সময় চেয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমলে তিনি সুদহার কমানোর বিষয়ে কাজ করবেন। তিনি আরো বলেন, ইডিএফের তহবিল কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে আমদানি-রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তিন মাস কিস্তি পরিশোধ সম্পর্কিত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ৬ ব্যাংকের কার্যক্রম সীমিত করায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখানে এ বিষয়ে বিবেচনা করার কথা বলেছি। বিকেএমইএর এ নির্বাহী সভাপতি আরো বলেন, ব্যাংকিং নীতিগুলো সঠিক ছিল না, সেগুলো সংশোধনের কথা বলা হয়েছে। বিনিয়োগ বান্ধব পরিস্থিতি সৃষ্টি করার কথা বলেছি।