১০ বছর পর আবারো সেই আলোচিত নিখোঁজ বিমান খোঁজার সিদ্ধান্ত

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৩ পিএম

ছবি : বিবিসি
২০১৪ সালে নিখোঁজ মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের বিমান এমএইচ৩৭০ আবারো খোঁজার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। ওই বছরের মার্চে কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাওয়ার পথে ২৩৯ যাত্রী ও ক্রুসহ হারিয়ে যায় বিমানটি। এরপর সেটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিমান পরিবহন ইতিহাসে যা অন্যতম রহস্য।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) মালয়েশিয়ার পরিবহন মন্ত্রী অ্যান্থনি লোক জানান, সরকারের মন্ত্রিসভা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সামুদ্রিক অনুসন্ধান প্রতিষ্ঠান ‘ওশেন ইনফিনিটি’র সঙ্গে ৭০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি সিই করতে সম্মত হয়েছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, আলোচিত বিমানটির খোঁজ না পেলে কোনো টাকা পাবে না অনুসন্ধান প্রতিষ্ঠানটি। শুধু বিমানটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেলেই তা পাবে তারা।
২০১৮ সালে একই শর্তে ৩ মাস ধরে অনুসন্ধান চালিয়েছিল ওশেন ইনফিনিটি। কিন্তু কোনো ফলাফল মেলেনি। এর আগে ২০১৭ সালে এক বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় ১৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে দুই বছর ধরে অনুসন্ধান চালানো হয়েছিল। তবে সেখান থেকেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
নতুন অনুসন্ধান ১৫,০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় হবে। মালয়েশিয়া সরকারের মতে, নতুন তথ্যের ভিত্তিতে এটি কার্যকর হতে পারে। এবার বিমানটির ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া সম্ভব হতেও পারে।
মালয়েশিয়ার পরিবহন মন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি; এবা অনুসন্ধান সফল হবে। যাত্রীদের পরিবারের জন্য যা সুখকর হবে।
এমইচ৩৭০ যাত্রীদের পরিবারের প্রতিক্রিয়া
মালয়েশিয়া সরকারের নতুন অনুসন্ধান শুরুর ঘোষণা সম্পর্কে এমইচ৩৭০-এর যাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। প্যাট্রিক গোমেজের স্ত্রী জ্যাকুইটা গনজালেস বলেন, এই খবর শুনে আমি খুবই খুশি। এটা আমার জন্য সেরা ক্রিসমাস উপহার।
আরেক যাত্রী বলেন, এই ঘোষণা আমাদের মধ্যে আশা, কৃতজ্ঞতা ও দুঃখের অনুভূতি তৈরি করেছে। ১১ বছর ধরে অজানা থাকার কষ্ট একেবারে অদ্বিতীয়।
বিমানের রহস্য
২০১৪ সালের ৮ মার্চ সকালে কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাওয়ার পথে বিমানটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে রাডার থেকে জানা যায়, বিমানটি পূর্বনির্ধারিত পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছিল। কিছু সময় পর এটি দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে বিধ্বস্ত হয়।
তবে কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তা স্পষ্ট নয়। বিমানটির কিছু ধ্বংসাবশেষ ভারত মহাসাগরের তীরে পাওয়া গেছে। কিন্তু মূল অংশ এখনো অজানা রয়েছে।
এ দুর্ঘটনায় বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তত্ত্বও উঠেছে। যেমন- পাইলটের ইচ্ছাকৃতভাবে বিমানটি নামিয়ে ফেলা বা বিদেশি সামরিক বাহিনীর দ্বারা বিমানটি ভূপাতিত করা ইত্যাদি। ২০১৮ সালের এক তদন্তে বলা হয়েছিল, বিমানের নিয়ন্ত্রণ যান্ত্রিকভাবে পরিবর্তন করা হয়েছিল। তবে এর পেছনে কে ছিলেন, তা সঠিকভাবে জানা যায়নি।
তদন্তকারীরা বলেছিলেন, এমন কোনো উপসংহার পাওয়া সম্ভব হবে না; যতক্ষণ না বিমানটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। এখন মালয়েশিয়া সরকার আশা করছে, এই নতুন অনুসন্ধান তাদের দীর্ঘদিনের অজানা প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম হবে।
সূত্র : বিবিসি