×

শিক্ষা

দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধানশিক্ষকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪১ পিএম

দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধানশিক্ষকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

ছবি: সংগৃহীত

   

২০২৪ জুলাই আন্দোলন পর স্কুলের প্রধানশিক্ষক মোস্তফা কামাল ছাত্রীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের কারণে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। প্রভাব বিস্তার করে তিনি আবার এই বিদ্যালয়ে ফিরে আসুক সম্মিলিতভাবে কেউ চায় না। 

পরিবেশ প্রতিবেশ এবং বিশেষ করে বাচ্চাদের শিক্ষা বিকাশ ও নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে একজন দুর্নীতিবাজ শিক্ষকের প্রত্যাবর্তন জোরালভাবে কাম্য নয়। এমতাবস্তায় সকল  শিক্ষার্থী , অভিভাবক, শিক্ষক ও কর্মচারি অত্র বিদ্যালয়ে তার পূণর্বহাল প্রত্যাখ্যান কামনা করে । এ ব্যাপারে তার পদত্যাগ বাস্তবায়নে  সবার সহায়তা প্রত্যাশা ।

লেক সার্কাস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তফা কামাল ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মের খতিয়ান:

১।   প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল অত্র বিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত হন অবৈধভাবে, অর্থ বিনিময় এবং দলীয় ক্ষমতা  প্রয়োগের মাধ্যমে। তিনি ছিলেন বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকার পন্থী ফজলে নূর তাপসের ঘনিষ্ট ভাজন। ফ্যাসিস্ট সরকারের একজন দোসর হয়ে তিনি রাজনৈতিক দলীয় যে কোন অনুষ্ঠানে কর্মীদের আপ্যায়নে ব্যয় করতেন বিদ্যালয় ফান্ড থেকে ।  

২। তিনি স্কুল ভবনে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি  ও সদস্যদেরকে অর্থের বিনিময়ে  ম্যানেজ করে  বাসভবন  নির্মাণ করে পরিবারসহ বসবাস করতেন । বাসায় সমস্যা হবে বলে তিনি বাস ভবনের আশে পাশে প্রায় ৪/৫ টি ক্লাস রুম সর্বদা তালা বন্ধ রাখতেন। তার বাসস্থানের মেরামতের যাবতীয় খরচ বিদ্যালয় থেকে বহন করা হতো।  তিনি মোবাইল বিল ,  বাসা ভাড়া , ইন্টারনেট বিল, পানির বিল, বিদ্যুৎ বিলসহ আরো আনুসাঙ্গীক খরচসহ প্রতি মাসে প্রায় দেড়  লক্ষ টাকা স্কুল ফান্ড থেকে নেন। নির্বাচন বিহীন মনগড়া কমিটি গঠন করে উক্ত  কমিটি দ্বারা অনুমোদন করেছেন ।

৩। তার বাসায় ব্যক্তিগত কাজের ও পারিবারিক কাজের জন্য তিনি স্কুলের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের কাজে ব্যবহার করেন। স্কুলের জন্য নিযুক্ত কাজের লোক ব্যাবহার হতো  তাঁর  ঘর পরিচর্যার  কাজে।  পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষকের বাসায় কাজ করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করায় তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। 

৪।  তিনি বিদ্যালয়ের প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও নিজের স্ত্রীকে বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ দেন। তার স্ত্রী শিক্ষক থাকা অবস্থায় ক্লাস বাদ দিয়ে টিচার্স রুমে থেকে অফিস সহকারী কে দিয়ে তার ক্লাস চালাতেন। তার স্ত্রীর অযোগ্যতার বহিঃপ্রকাশ ঘটলে অভিভাবক ও কমিটির কতিপয় সদস্যদের চাপে চাকুরী ছাড়েন। তিনি প্রতিটি শিক্ষকের উপর ক্ষীপ্ত হয়ে উঠেন এবং বিভিন্ন ভাবে শিক্ষকদের উপর প্রতিশোধ নিতে থাকেন। যে সমস্ত শিক্ষার্থী তার স্ত্রীর ক্লাস নেওয়ার অযোগ্যতা তুলে ধরেন তাদের উপর তিনি মানসিক নির্যাতন করেন।

৫। ২০১৭ সালে বৈশাখী অনুষ্ঠান পালনের  সরকারি নির্দেশনা আসে । সেই সময় সরকার বেসরকারী স্কুলের শিক্ষকদের বৈশাখী ভাতা না দেয়ায় সরকার  নির্দেশিত র‍্যালী পালন করার সময় শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে কালো ব্যাজ ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেন। এই সংবাদটি আজাদ স্যার তার ফেইস বুক পেইজে শেয়ার করার কারণে তাকে মানসিকভাবে হেনস্থা  করা হয় এবং  সকল শিক্ষককে সবসময় মানসিক প্রেসারে রাখতেন । ঠিক ঐ বৈশাখের সময় অনুষ্ঠানের অযুহাত দেখিয়ে অযথাই ৪ জন শিক্ষককে শোকোজ করে তদন্ত কমিটি গঠন করে তাদেরকে হয়রানী করেন। তদন্তে শিক্ষকগণ নির্দোষ প্রমাণিত হন।   

৬। বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক জনাব মাসুম বিল্লাহ ও  কামরুজ্জামান  গণিত শিক্ষক   আয়াতুল্লাহ খোমেনী, পদার্থ বিজ্ঞান শিক্ষক শাহরিয়ার, রসায়ন বিজ্ঞানের শিক্ষক রাকিব উদ্দীন   কে দিয়ে  রুটিন কার্যক্রম স্থগিত করে নিজের ছেলেকে প্রাইভেট পড়ানোর জন্য জোরপূর্বক বাসায় পাঠাতেন ।

৭। মধুমতি  ব্যাংক কর্তৃক  বিদ্যালয় কে একটি  গাড়ী উপহার দেন । সেই গাড়ি তার ব্যক্তিগত যাবতীয় কাজে ব্যবহার  করেন।   মধুমতি  ব্যাংক কর্তৃক উপহারের গাড়ী নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করে নিয়েছিলেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে আবার বিদ্যালয়ের নামে  রেজিস্ট্রেশন করা হয় । এতে বিদ্যালয়ের হতে  ৩৬০০০.০০ ছত্রিশ হাজার টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হয়।   উক্ত গাড়িটি বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থীর প্রয়োজনে ব্যবহার করতে দিতেন না । 

৮। তিনি স্কুলের পিয়ন, আয়া ও দারোয়ান কে স্কুল চলাকালীন সময়ে স্কুলের কাজ কর্ম বাদ দিয়ে  তার বাচ্চাদের স্কুলে আনা নেওয়া, বাজার-ঘাট, বাসার কাজ করার কাজে ব্যবহার করেন। যারা ঐ সকল  কাজ করতে অস্বীকার করত তাদের কে চাকুরি ছেড়ে যাওয়ার কথা বলা হতো। যার কারণে আমরা আমাদের প্রয়োজনে পিয়ন দারোয়ান কে পেতাম না। তার বড় ছেলেকে নিউ মডেল স্কুল থেকে আনতে গিয়ে বিদ্যালয়ের একজন পিয়ন বাস চাপা পরে প্রায় ছয় মাস হাসপাতালে থাকেন এবং  বর্তমানে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে ।    

৯। তিনি দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বেসরকারি শিক্ষক  কর্মচারি অবসর সুবিধা বোর্ড এর সদস্য পদ লাভ করেন। বেসরকারি অবসর সুবিধা বোর্ডের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাথ  হয়েছে। তিনি সদস্য ছিলেন বিধায় এই আত্মসাত টাকার সাথে সেই জড়িত । 

১০।  তিনি সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে স্কুল ফান্ড থেকে বেতন দিয়ে তার গৃহ পরিচারিকা  নিয়োগ করেছিলেন ।

 যা বেতন শিটে বিশেষ ভাতা বাবদ ১০,০০০/- দশ হাজার টাকা দেখানো হতো। বিদ্যালয়ে সরকারি প্রদত্ত বেঞ্চের নিচের বই রাখার কাঠ খুলে বাসার ব্যক্তিগত ফার্নিচার বানিয়েছেন।    

১১। উন্নয়ন মূলক কাজ বলে বিশুদ্ধ পানির নামে নাম মাত্র টাকা খরচ করে ৭৮,০০০/- (আটাত্তর হাজার) টাকার ব্যয় দেখান ।  

১২। তিনি ফজলে নূর তাপসে কে সন্তুষ্ট করে নিজের কাজ হাসিল করার জন্য অন্যান্য ব্যাংকে গচ্ছিত রিজার্ভ ফান্ডের যাবতীয় টাকা তুলে মধুমতি ব্যাংকে জমা রাখেন। যা পূর্ববর্তী ব্যাংকের মুনাফার তুলনায় অনেক কম ছিল।এতে বিদ্যালয় বিগত সাত বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা বঞ্চিত হয়। 

১৩। বিশেষ ক্লাসের নামে কোচিং বাণিজ্য করতেন। কোন মেয়ে বা অভিভাবক রাজি না হলে বা বিশেষ ক্লাস না করলে তাদের টেস্ট পরীক্ষায় আটকিয়ে দিয়ে আরও বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে আরও কয়েকগুন অর্থ আদায় সাপেক্ষে ফরম পূরণের সুযোগ দেওয়া হতো।  

১৪। তিনি  কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের  সহ সভাপতি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু পরিবার অধিকাংশ অনুষ্ঠানই এই বিদ্যালয়ে  মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হতো। এতে শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম ব্যহত হতো। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জোর করে ৩২ নং বঙ্গবন্ধুর বাড়ী নিয়ে যেত।   সেখানে শিক্ষার্থীরা শারীরিক হ্যারেজমেন্ট হতো। বিষয়টি অভিভাবকদের পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষকে অবহিত করার পরেও প্রধান শিক্ষক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নাই। বরং শিক্ষার্থীদের ভয় ভীতি দেখিয়ে উক্ত কাজে যেতে বাধ্য করত

১৫। স্কুলের ম্যনেজিং কমিটি গঠন করার জন্য লোক দেখানো ভোটার তালিকা তৈরি করা হতো ঠিকই কিন্তু কোন দিনই নির্বাচন করা হতো না  আগেই সে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সরণাপন্ন হতো  এবং তার সুবিধামত ব্যক্তিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হতো। কোন অভিভাবক নির্বাচন করতে চাইলে তাদের কে যে কোন অযুহাতে ভোটার না হওয়ার জন্য অনুরোধ করতেন এবং নির্বাচনের তফসিলের তোয়াক্কা  না করে শুধু পরিচিত ভোটারদের ফরম পূরণ করে ডিসি অফিসে গিয়ে চূড়ান্ত অভিভাবক প্রার্থী নির্বাচন করতেন।  

১৬। যে সকল শিক্ষক তার অন্যায় ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করত তাদের কে মানসিক টর্চার করত। 

১৭। সরকারি সম্পত্তি  শিক্ষার্থীদের বসার  বেঞ্চ থেকে  কাঠের তকতা তুলে নিজের বাসার ফার্নিচার তৈরি করেন। 

১৮।  বিদ্যালয়ের বাসভবন থাকা অবস্থায় সরকার প্রদত্ত বাড়ি ভাড়া গ্রহণ করতেন। 

১৯। বিদ্যালয়ে  অর্থের বিনিময়ে কর্মচারী নিয়োগ বানিজ্য করতেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App