
প্রিন্ট: ০১ জুন ২০২৫, ১২:২৪ পিএম

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি: সংগৃহীত
স্মার্টকার্ড উদ্বোধনের পর আট বছর কেটে গেলেও এখনো ১৪৩ উপজেলার প্রায় দুই কোটি ভোটারের উন্নত মানের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা স্মার্টকার্ড ছাপাতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর এ গাফিলতির কারণে কোটিখানেক ভোটার স্মার্টকার্ড পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ইসির স্মার্টকার্ড প্রস্তুত ও বিতরণ সংক্রান্ত বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইসি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশে মোট উপজেলার সংখ্যা ৫১৯। এগুলোর মধ্যে বিতরণ শেষ হয়েছে ৩৫০ উপজেলার স্মার্টকার্ড। বর্তমানে স্মার্টকার্ড বিতরণ চলমান আছে এমন উপজেলার সংখ্যা ১১। স্মার্টকার্ড মুদ্রিত হয়েছে কিন্তু বিতরণ শুরু হয়নি এমন উপজেলার সংখ্যা ১৫। পার্সোনালাইজেশন সেন্টারে ডেলিভারির অপেক্ষা রয়েছে এমন উপজেলার সংখ্যা ২১। আর স্মার্টকার্ড মুদ্রণই করা হয়নি এমন উপজেলার সংখ্যা ১৪৩।
এ বিষয়ে স¤প্রতি অনুষ্ঠিত এক সভায় ইসি সচিব শফিউর আজিম বলেন, অবিতরণকৃত কার্ড দ্রুত বিতরণের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা এনআইডি সেবাকে সহজ করতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছি। আমরা চেষ্টা করছি। এজন্য কর্মকর্তাদের মনিটরিং করার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে।
ইসির এনআইডি স্মার্টকার্ড প্রস্তুত ও বিতরণ বিভাগ সূত্রে জানান হয়েছে, ভোটার তালিকার ভিত্তিতে নাগরিকদের উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ২০১১ সালে আইডিইএ (স্মার্টকার্ড) প্রকল্পটি হাতে নেয় কমিশন। তারপর দীর্ঘ চার বছর নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে স্মার্টকার্ড তৈরির দিকে এগোয় সংস্থাটি।
এক্ষেত্রে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান অবার্থ্রুর টেকনোলজিসের সঙ্গে ওই সময়ের ৯ কোটি ভোটারের জন্য নয় কোটি ব্ল্যাংক স্মার্টকার্ড তৈরি করে দিতে ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি চুক্তি করে ইসি। যার মেয়াদ ছিল ১৮ মাস। কিন্তু মেয়াদ বাড়ানোর পরও ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত চুক্তিতে উল্লিখিত কার্ড সরবরাহ করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে, সে বছরের শেষের দিকে অবার্থ্রূরের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অবার্থ্রূ ১ দশমিক ৫১ ডলার দরে ৭ কোটি ৭৩ লাখ কার্ড সরবরাহ করতে পেরেছিল। সেই মোতাবেক আগের এক কোটি ২৭ লাখ নাগরিকের কার্ড ঘাটতি ছিল। এই কয় বছরে ভোটার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন। সব মিলিয়ে আরো প্রায় সাড়ে চার কোটির মতো ব্ল্যাংক কার্ড তৈরি এবং তাতে নাগরিকের তথ্য ইনপুট করে বিতরণে যেতে হবে। এজন্য আইডিইএ দ্বিতীয় প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। আর এক হাজার ৮০৫ কোটি টাকার এ প্রকল্প থেকে তিন কোটি কার্ড দেয়ার কথা থাকলেও ডলারের দাম বাড়ায় দুই কোটি ৩৬ লাখ ৩৩ হাজার ৭২০ কার্ড দেবে বিএমটিএফ। অবশিষ্ট কার্ডগুলো প্রকল্পের মেয়াদ শেষে
রাজস্ব খাত হতে কেনার ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। তবে নতুন প্রকল্প থেকে কার্ড তৈরি ও বিতরণেও তেমন অগ্রগতি নেই। ১৪৩ উপজেলায় প্রায় দেড়-দুই কোটির মতো ভোটারের স্মার্টকার্ড ছাপানোই হয়নি বলে জানিয়েছেন ইসির স্মার্টকার্ড পরিষেবা সংশ্লিষ্টরা।