খরা মৌসুমে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি, ফসল নষ্টের আশংকায় কৃষক

রবিউল ইসলাম বাবুল, লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৯ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
খরা মৌসুমে তিস্তায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা পাড়ের সাধারণ মানুষ ও কৃষকের মনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এতে তিস্তার চরে জেগে ওঠা আলু, মিষ্টি কুমড়া, ডাল, বাদাম ও পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে হঠাৎ তিস্তা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তারা অনেকেই বলছেন, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে আগামী ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ভারতের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। তাই তারা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কর্মসূচির আগেই পানি ছেড়ে দিয়েছে।
এদিকে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, তিস্তা পাড়ের মানুষের পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে লাখ লাখ মানুষের সমাগমের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এতে গ্রামীণ খেলাধুলা ও নানা সাংস্কৃতিক আয়োজনেরও ব্যবস্থা রয়েছে। তবে হঠাৎ করেই তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এই কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করে তারা।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ভোরের কাগজের সাংবাদিক রবিউল ইসলাম বাবুলকে জানিয়েছে, শনিবার বিকেল ৩টার পর থেকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টের পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। বিকেল ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ ৫০.১০ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম। তবে পানি প্রবাহ অব্যাহত থাকলে পানির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে তিস্তা পাড়ের কৃষকরা আকস্মিক পানি বৃদ্ধিতে ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন। তিস্তায় জেগে ওঠা বালুচরে রসুন, পেঁয়াজ, মিষ্টি কুমড়া, ডাল ও বাদামসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।
তিস্তা পাড়ের কৃষক আলামিন বলেন, তিস্তার চরে ৫ বিঘা জমিতে আমি রসুন ও পেঁয়াজ ভূট্টা ও তামাক আবাদ করেছি। ভারত যদি আরো পানি ছাড়ে তাহলে আমার সব ফসল ডুবে যাবে। এখন ফসল নিয়ে বড় শঙ্কায় আছি।’
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপ অপারেটর নুরুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে পানি ছেড়ে দেয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ বেড়েছে। কত পরিমান পানি আসবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’
উক্ত কর্মসূচিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেদিন ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকার কথা রয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যপারে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক ও বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘তিস্তার পানি বৃদ্ধির বিষয়টি শুনেছি। তবে আগামী ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তা পাড়ে ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।