শাহজালালে ১২ স্বর্ণের বারসহ আটক দুই চোরাকারবারি

আগের সংবাদ

ডেঙ্গু বাড়ছে : মশার প্রজননস্থল নির্মূলে পদক্ষেপ জরুরি

পরের সংবাদ

তারা রবি ঠাকুরের ‘নন্দিনী’

প্রকাশিত: মে ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রক্তকরবী’ নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘নন্দিনী’। যান্ত্রিক যক্ষপুরীর অনন্য সৌন্দর্যের প্রতিভূ বা প্রেমের প্রতীক সে। নাটকটি প্রথম রচিত হয়েছিল ১৯২৬ সালে। নাটকের এ ‘নন্দিনী’ চরিত্রটি করে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন অনেক গুণী শিল্পী।
এপার-ওপার দুই বাংলাতেই রক্তকরবী নাটকটি মঞ্চায়িত হয়েছে বহুবার। টিভি নাটক কিংবা সিনেমার পর্দাতেও বিভিন্নভাবে
হাজির হয়েছে রক্তকরবীর ‘নন্দিনী’। আজ মেলার পাঠকদের জন্য সেইসব স্বর্ণোজ্জ্বল নন্দিনীদের গল্প

রক্তকরবীর প্রথম নন্দিনী

রক্তকরবী নাটকটি প্রথমবার যখন মঞ্চায়ন করা হয় তখন বেশ বিপাকেই পড়তে হয়েছিল স্বয়ং রবী ঠাকুরকে। কারণ সব চরিত্রের জন্য উপযুক্ত কাউকে পাওয়া গেলেও নন্দিনী চরিত্রের জন্য কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না। নাটকটি রচনার পর রবীন্দ্রনাথ নিজেই রক্তকরবী মঞ্চায়ন করতে গিয়ে সব চরিত্র তিনি চূড়ান্ত করেছেন। শুধু বাকি নন্দিনী। নন্দিনী চরিত্রের মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে একটি মেয়ে পাওয়া গেল, যে নন্দিনী হতে পারে। সেই মেয়েটি ছিল সিলেটের। রবীন্দ্রনাথ নিজেই তাকে নন্দিনী হিসেবে চূড়ান্ত করেছিলেন। নাম না জানা সেই মেয়েটিই প্রথম নন্দিনী। কলকাতার বাঘা বাঘা অভিনেত্রী থাকতে আমাদের সিলেটের সেই তরুণীই রবীন্দ্রনাথের চোখে প্রকৃত নন্দিনী হয়ে উঠেছিলেন।

তৃপ্তি মিত্র
নন্দিনী চরিত্রে অভিনয় করে এ পর্যন্ত যিনি সব থেকে বেশি আলোচিত হয়েছিলেন তিনি কিংবদন্তি অভিনেত্রী তৃপ্তি মিত্র। ভারতে বহুরূপী নাট্যদলের প্রযোজনায় ১৯৫১ সালে নাট্যগুরু শম্ভু মিত্রের নির্দেশনায় রক্তকরবী নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছিল। এতে নন্দিনী চরিত্রে তৃপ্তি মিত্রের অভিনয়কে এখনো ভারতীয় মঞ্চনাটকের সর্বকালের সেরা কীর্তির মর্যাদা দেয়া হয়। টানা ১১ বছর তিনি নন্দিনী সেজে মঞ্চ মাতিয়েছিলেন। তৃপ্তি মিত্র যতদিন নন্দিনী সেজে মঞ্চে উঠেছেন, প্রতিবারই প্রেক্ষাগৃহ থাকতো কানায় কানায় পূর্ণ। পরবর্তী সময়ে তৃপ্তি মিত্রের মেয়ে শাঁওলী মিত্রসহ মধুমতি বসু, অনিন্দিতা রায়, বাসন্তী গুহ প্রমুখ কলকাতার ডাকসাইটে অভিনেত্রীরা এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কিন্তু কেউই তৃপ্তি মিত্রের মতো খ্যাতি পাননি। তৃপ্তির মিত্রের অভিনয় দুই বাংলাতেই প্রশংসিত হয়েছিল।

অপি করিম
নন্দিনী চরিত্রে অভিনয় করে নানাভাবে আলোচিত হয়েছেন জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী অপি করিম। ২০০১ সালের ৩০ নভেম্বর নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের প্রযোজনায় মঞ্চে আসে রক্তকরবী। এ নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন নাট্যজন আতাউর রহমান। নাটকটিতে অভিনয় করার আগে মঞ্চে অভিনয় করার খুব একটা অভিজ্ঞতা ছিল না অপি করিমের। তবে নাচ এবং গানের মাধ্যমে অনেকবার মঞ্চ মাতিয়েছেন তিনি। ঢাকাই নাট্যচর্চার প্রচলিত নিয়ম ভেঙে টিভি অভিনেত্রীকে দিয়ে মঞ্চ অভিনয় করিয়ে নতুন চমক দেখিয়েছিলেন নির্দেশক আতাউর রহমান।
অবশ্য এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে অনেক। তখন নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের অনেকেই ছিল যারা নন্দিনী চরিত্রের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছিল। তবে নন্দিনী চরিত্রে আতাউর রহমান অপি করিমকেই বেছে নিয়েছিলেন। অপি করিম নাটকটির ৮৩টি প্রদর্শনীতে অভিনয় করার পর পড়াশুনার জন্য জার্মানিতে চলে যান। এরপর কাকলী নামের আরেকজন অভিনেত্রী এই চরিত্রটিতে নিয়মিত অভিনয় করেন। নাটকটির ১০০তম প্রদর্শনীতে সর্বশেষ অভিনয় করেছেন অপি করিম।

নূনা আফরোজ
প্রাঙ্গণেমোর নাট্যদলের প্রযোজনায় নিয়মিত প্রদর্শিত হচ্ছে রক্তকরবী নাটকটি। এতে নূনা আফরোজ নন্দিনী চরিত্রে অভিনয় করছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি নাটকটির নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।
নাটকটিতে নূনা আফরোজের সাবলীল অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়েছে। ঢাকা এবং দেশ-বিদেশের অনেকগুলো প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন নূনা আফরোজ। রক্তকরবী নাটকটি প্রাঙ্গণেমোরের দর্শক নন্দিত প্রযোজনাগুলোর মধ্যে অন্যতম। টিভিতেও বিভিন্ন সময় নন্দিনী চরিত্রের খ্যাতিরূপ উঠে এসেছে। বিভিন্ন সময় নন্দিনী সেজে পর্দায় এসেছেন সাদিয়া ইসলাম মৌ, শশী, তারিন, মিম প্রমুখ। কলকাতা, আগরতলায়ও মঞ্চের পাশাপাশি টিভি পর্দায় দেখা গেছে নন্দিনীদের।

:: হেমন্ত প্রাচ্য

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়