মিয়ানমার থেকে রাষ্ট্রদূতকে ফেরাচ্ছে সরকার

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ০৯:২৯ এএম

তাকে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই দায়িত্ব হস্তান্তর করে দেশে ফেরার জন্য বলা হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত
রাখাইনে মানবিক করিডর স্থাপনের প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিতর্কের মধ্যেই মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনোয়ার হোসেনকে ঢাকায় ফেরত আনার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক অফিস আদেশে তাকে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই দায়িত্ব হস্তান্তর করে দেশে ফেরার জন্য বলা হয়েছে।
ঢাকা ও নেইপিডোর নির্ভরযোগ্য কূটনৈতিক সূত্র এবং সরকারি কর্মকর্তারা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০২৩ সালের আগস্টে মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মনোয়ার হোসেন। বিসিএস (পররাষ্ট্র) ২০তম ব্যাচে প্রথম স্থান অধিকার করা মনোয়ার পেশাদার কূটনীতিক হিসেবে নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন এবং সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ মিশনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। রাষ্ট্রদূত হিসেবে তিনি সাবেক কূটনীতিক মঞ্জুরুল করিম খানের স্থলাভিষিক্ত হন।
গত ২৭ এপ্রিল রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে সরকারের নীতিগত সম্মতির তথ্য প্রকাশ করেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। এরপর শুরু হয় করিডর বিতর্ক। রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে, যা এখনো থামেনি। সরকারকে এ নিয়ে ‘বিশেষ ব্রিফিং’-এও যেতে হয়েছে।
আরো পড়ুন : চারদিনের সফরে রাতে জাপান যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
এই করিডর ইস্যুর পাশাপাশি মিয়ানমারের জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)-এর সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের বক্তব্য ঘিরেও বিতর্ক আরো তীব্র হয়। এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে মিয়ানমারের সামরিক সরকার বাংলাদেশের কাছে কূটনৈতিক প্রতিবাদ পাঠিয়েছে।
এছাড়া, এপ্রিল মাসে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনের সময় জান্তা সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী উ-থান শোয়ের সঙ্গে বৈঠক করনে খলিলুর রহমান। সেখানে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রসঙ্গ তোলা হয়। যদিও মিয়ানমার আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা থেকে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনের জন্য যোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করার কথা বলেছে। পরে নতুন করে লাখের বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের খবরে ‘প্রত্যাবাসন’ নিয়ে উল্টো সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার।
এর আগেও চলতি মে মাসের মাঝামাঝিতে মিয়ানমারে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আফতাব হোসেনকে জরুরি ভিত্তিতে প্রত্যাহার করে ঢাকায় ফেরত আনার নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। প্রতিস্থাপক ছাড়াই জারি করা এই নির্দেশকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক মহলে আলোচনার সৃষ্টি হয়।