
প্রিন্ট: ০১ জুন ২০২৫, ০৮:১৭ পিএম
আরো পড়ুন

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:২০ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
‘ভাঙা’ নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে অন্তর্ভূক্তিমূলক করার পাশাপাশি সব অংশীজনকে দায়বদ্ধতার মধ্যে আনার লক্ষ্যে প্রায় ১৫০ সুপারিশ রেখেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।রাষ্ট্র সংস্কারের সুনির্দিষ্ট সুপারিশ নিয়ে এদিন তেজগাঁওয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ছাড়াও প্রতিবেদন পেশ করেছে সংবিধান, পুলিশ ও দুদক সংস্কার কমিশন।
প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচন কমিশনকে কার্যকর ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান করার লক্ষ্যে তাদের দেওয়া প্রতিবেদন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে কথা বলেছেন বদিউল আলম। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এটা একটা গুরু দায়িত্ব।
নির্বাচন ব্যবস্থা ‘ভেঙে’ গিয়েছে, এটাকে জোড়া লাগানোর জন্য এই সংস্কার কমিশনের প্রচেষ্টা। কাজটি করতে গিয়ে তিনি উত্তপ্ত পরিস্থিতি ছিলেন এবং সামনের দিনে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হতে পারে তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা কতগুলো প্রস্তাব করেছি- যেগুলো পরিস্থিটাকে আরো উত্তপ্ত করতে সহায়তা করবে। নির্বাচন ব্যবস্থায় যাতে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত হয় সে চেষ্টাই করার কথা তুলে ধরেছেন তিনি।
একইসঙ্গে সব অংশীজনের দায়বদ্ধতা যেন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং নির্বাচনটা যেন অন্তর্ভূক্তিমূলক হয়, ভোটারের ভোট দেয়ার অধিকার যাতে প্রতিষ্ঠিত হয় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করেছি। ১৫০টির মতো ছোটবড় সুপারিশ রয়েছে। নির্বাচনী ব্যবস্থায় সংস্কার আনতে সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয়ে সংবিধান সংক্রান্ত সুপারিশ রয়েছে বলেছেন কমিশন প্রধান।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বিএনপিসহ বেশির ভাগ দলের বর্জনের মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। প্রবল আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। তার আগে ২০১৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগের আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি নির্বাচন ব্যাপক সমালোচিত হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে কর্তৃত্ববাদী শাসনের অভিযোগ ওঠে।
দুর্নীতি, অর্থ পাচার, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ দেশে ও বিদেশে চাপে পড়ে আওয়ামী লীগ সরকার। ফলে ক্ষমতার পালাবদলের পর রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। দুই ধাপে গঠিত হয় ১১টি সংস্কার কমিশন। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর এই প্রচেষ্টার পেছনে অনুপ্রেরণার কথা তুলে ধরেন বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, গ্রামের থেকে অনেক মানুষ এসেছে কথা বলতে। দুয়েকজন বলে গিয়েছে- সংসদ ভবনের এ ইমারতে যেন কুৎসিত লোক আসতে না পারে। আমরা মনে করি- এটা ছিল আমাদের প্রতি ম্যান্ডেট।
১৮টি উল্লেখযোগ্য জায়গায় ১৫০টির মতো সুপারিশ করেছি। এ সুপারিশের অন্যতম লক্ষ্য- নির্বাচন কমিশনের (ইসি) স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। তাদের ক্ষমতায়িত করা। একইসঙ্গে তাদের দায়বদ্ধ করা। দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হলে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা যাবে, সে আশা করাও দুরাশা বলে মন্তব্য করেন কমিশন প্রধান।