পুলিশকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা দুর্বৃত্তদের পরিচয় পাওয়া গেল

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৭ পিএম

যাত্রবাড়ীতে এক পুলিশ সদস্যকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখে দুর্বৃত্তরা। ছবি : সংগৃহীত
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে হামলা ও নাশকতার সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকায় এক পুলিশ সদস্যকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখে দুর্বৃত্তরা। তাদের সবার পরিচয় পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। ডিবিপ্রধান বলেন, যারা পুলিশকে রাস্তায় হত্যার পর ঝুলিয়ে রেখেছিল, তাদের প্রত্যেকের নাম-পরিচয় পেয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশ ও ছাত্রলীগ মারলে যারা টাকা দেয়ার কথা বলেছিল তাদের মধ্যে কয়েকজনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে।
হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তারদের মোবাইল থেকে অনেক মেসেজ (খুদেবার্তা) পেয়েছি। দেশের বাইরে থেকে তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, ‘নতুন কমিটির দায়িত্ব তোমাদের দেয়া হয়েছে, যদি নির্দেশনা না মানো তাহলে তোমাদের কমিটি থেকে বাদ দেয়া হবে।’
আরো পড়ুন : পুলিশ মারলে ১০ হাজার, ছাত্রলীগ মারলে ৫ হাজার: ডিবিপ্রধান
যারা ঢাকা শহরকে অকার্যকর করার দায়িত্ব নিয়েছিল তাদের মধ্যে সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সাইফুল ইসলাম নিরব, এস এম জাহাঙ্গীর, রফিকুল ইসলাম মজনু ও আমিনুল ইসলামসহ বিএনপি-জামায়াতের অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান ডিবিপ্রধান।
ডিবিপ্রধান বলেন, শুধু তাই নয়, গত বছরের ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় ও পরবর্তীসময়ে যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, রেললাইনে আগুন দিয়েছে, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে, পুলিশ হাসপাতালে হামলা ও পুলিশ হত্যা করেছে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালিয়েছে- সেসব লোককে বেছে বেছে বিএনপির বিভিন্ন কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, পুলিশের মনোবল যদি ভেঙে দেয়া যায় তাহলে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির যে ষড়যন্ত্র তা সফল হবে। সেই মানসিকতা নিয়েই গত বছরের ২৮ অক্টোবরও পুলিশের ওপর হামলা করেছিল। সেসময় একজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশ হাসপাতাল ও প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুর করা হয়। স্বাধীনতাবিরোধী চক্রটি আবারো পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন-হামলা ও কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে। এটা কি কোনো সভ্য দেশের মানুষের পক্ষে সম্ভব?’ বলেন গোয়েন্দাপ্রধান।
তিনি বলেন, ডিবি ও থানা পুলিশ ঢাকার বিভিন্ন মহল্লায় অভিযান পরিচালনা করছে। যারা সরকারি ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা করেছে, অগ্নিসংযোগ করেছে ও পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আবার এটাও বলে রাখি, কাউকে অযথা হয়রানি করা হবে না। সাংবাদিকদের উদ্দেশে হারুন বলেন, পুলিশের কোনো সদস্য সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে- যদি এমন সংবাদ পান তবে আমাদের জানাবেন।
হামলায় অর্থের জোগান কীভাবে এসেছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের ভেতর ঢুকে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির নব্য কমিটির নেতারা উপরের নির্দেশ পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর চালিয়েছে, এটি তাদের পূর্বপরিকল্পিত। পরিকল্পিত না হলে এত দ্রুত সময়ের মধ্যে বাইরে থেকে ঢাকায় নিয়ে এলো কীভাবে?
তিনি আরো বলেন, নাশকতাকারীদের কাছে খাবার, পানি, অস্ত্র, লাঠি পৌঁছে দেয়ার কাজ করেছে জামায়াত-বিএনপিপন্থি কিছু উঠতি ব্যবসায়ী। তাদের অনেককেই আমরা গ্রেপ্তার করেছি, বাকিদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। যারা মাঠপর্যায়ে টাকা বিলি করেছে তাদেরও আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তাদের কাছ থেকে আমরা সব তথ্যই পেয়েছি।