বিমান বাহিনী একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ৮৪তম বাফা কোর্স ও ডিরেক্ট এন্ট্রি-২০২৪ এ কোর্সের কমিশন প্রাপ্তি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ (গ্রীষ্মকালীন) বৃহস্পতিবার যশোরে অবস্থিত বিমান বাহিনী একাডেমি প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন)  আন্তঃবাহনী জনসংযোগ পরদিপ্তর (আইএসপআির) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। তিনি গ্র্যাজুয়েটিং অফিসারদের মাঝে ট্রফি এবং ফ্লাইং ব্যাজ বিতরণ করেন। 

গুগল নিউজে ভোরের কাগজের খবর পড়তে ফলো করুন

অফিসার ক্যাডেট সাবিত হাসান রাফি ৮৪তম বাফা কোর্স সার্বিক প্রশিক্ষণে সর্বোচ্চ কৃতিত্বের জন্য ‘সম্মানসূচক তরবারি’, অফিসার ক্যাডেট মো. ফাহিম উড্ডয়ন প্রশিক্ষণে সেরা কৃতিত্বের জন্য ‘বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ট্রফি’ এবং অফিসার ক্যাডেট মো. মুস্তাকীমুর রহমান জেনারেল সার্ভিস প্রশিক্ষণে কৃতিত্বের জন্য ‘কমান্ড্যান্টস ট্রফি’ লাভ করেন। এছাড়াও ৮৪তম বাফা কোর্স (গ্রাউন্ড ব্রাঞ্চ) এ সেরা কৃতিত্বের জন্য অফিসার ক্যাডেট মো. মুস্তাকীমুর রহমান ‘বিমান বাহিনী প্রধানের ট্রফি’ লাভ করেন। এই গ্রীষ্মকালীন সেমিস্টারে বীর উত্তম সুলতান মাহমুদ স্কোয়াড্রন চ্যাম্পিয়ন বিবেচিত হয়ে একাডেমি পতাকা লাভ করে।  

আরো পড়ুন: রপ্তানি বাড়াতে এয়ার-কার্গো সহজলভ্য করার দাবি ব্যবসায়ীদের

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তার ভাষণ শুরু করেন। তিনি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যাদের আত্মোৎসর্গের কারণে আজ আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। সেই সঙ্গে স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধে পাহাড়সম মনোবল সৃষ্টিকারী বিমান অভিযানের উদ্যোক্তা বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ও দুঃসাহসিক আকাশ যুদ্ধ পরিচালনাকারী কিলো ফ্লাইটের সদস্যদের যাদের দৃপ্ত প্রত্যয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত হয়েছে। তিনি গর্বের সঙ্গে স্মরণ করেন যে, জাতির পিতা একটি আধুনিক বিমান বাহিনীর স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং তাঁর এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে আরও শক্তিশালী ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে; বাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে সর্বাধুনিক বিমান, র‌্যাডার, আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিক্যাল এবং সরঞ্জামাদি। ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আওতায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে আরও আধুনিক বিমান, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংযোজনসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও দিক নির্দেশনায় দেশের এভিয়েশন সেক্টরকে উন্নত করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ^বিদ্যালয়। তিনি বলেন, সম্প্রতি বিমান বাহিনীর সদস্যগণ প্রথমবারের মতো নিজেদের প্রশিক্ষণ বিমান ‘বঙ্গবন্ধু বেসিক ট্রেইনার’ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। বিমান বাহিনী একাডেমির বিশ^মানের প্রশিক্ষণ, যার কারণে বিশে^র বিভিন্ন বন্ধুপ্রতিম দেশের অফিসার ক্যাডেটরা এ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে এবং যুগোপযোগী কার্যক্রমকে দৃষ্টান্তমূলক বলে তিনি অভিহিত করেন। পরিশেষে তিনি সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাফল্য কামনা করেন এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমির সকল সদস্যদেরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

এ কুচকাওয়াজের মাধ্যমে ১৩ জন মহিলা অফিসার ক্যাডেটসহ মোট ৫৯ জন অফিসার ক্যাডেট কমিশন লাভ করেন। অফিসার ক্যাডেট একাডেমির সিনিয়র আন্ডার অফিসার এ এস এম মোস্তাকিম বিল্লাহ আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজের নেতৃত্ব প্রদান করেন। কুচকাওয়াজ শেষে বিমানবাহিনী একাডেমির বিভিন্ন প্রকার বিমানের মনোজ্ঞ ফ্লাইপাস্ট ও আকর্ষণীয় এ্যারোবেটিক ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়। 

অনুষ্ঠানে সামরিক ও অসামরিক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন দেশের সামরিক অ্যাটাশেগণ এবং সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।