×

জাতীয়

নিত্যপণ্য এখন বিলাসীপণ্যের মতো দুর্লভ: সিপিডি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৬:২৯ পিএম

নিত্যপণ্য এখন বিলাসীপণ্যের মতো দুর্লভ: সিপিডি

ছবি: সংগৃহীত

সারাদেশে নিত্যপণ্যের দাম এতটাই বেড়েছে যে, তা কম আয়ের মানুষের কাছে সেগুলোকে বিলাসবহুল বলে মনে হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি কমাতে না পারা সরকারের বড় ধরনের ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

রবিবার (২ জুন) বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বাংলাদেশের অর্থনীতির হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে। ঢাকায় সিপিডির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

সংস্থার অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীকে সুবিধা দিতে গিয়ে সরকার নিত্যপণ্যকে বিলাসীপণ্যের মতো দুর্লভ করে তুলেছে। ধনীর চেয়ে গরীবের কাছে পণ্য বিক্রি করে বেশি মুনাফা করছেন ব্যবসায়ীরা। আগামী বাজেটে প্রবৃদ্ধির পেছনে না ছুটে, সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফেরানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা। ধনী গরীব নির্বিশেষে দেশের মানুষের প্রধান খাবার ভাত। দেশে উৎপাদন বাড়লেও ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে চালের দাম। তবে মোটা চালের দাম যতটা বেড়েছে, চিকন চালের দাম ততটা বাড়েনি।

সিপিডির গবেষণা বলছে, চার বছরে পাইজাম চালের দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশ, মিনিকেটের ১৭ ও মোটা চালের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ।  মসুর ডালের দাম বৃদ্ধির বেলায় একই চিত্র পেয়েছে সিপিডি। ছোট মসুরের দাম বেড়েছে ৫৬ শতাংশ। অথচ মোটা মসুরের দাম বেড়েছে ৯৫ শতাংশ। প্যাকেট ময়দার দাম বেড়েছে ৪৫ শতাংশ। আর খোলা ময়দার দাম বেড়েছে ৬০ শতাংশ। 

সয়াবিন তেলের দাম সম্পর্কে সিপিডির বলছে, এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্ববাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ছিল বাংলাদেশি টাকায় ১০৫ টাকা। এটি দেশের বাজারে বিদ্যমান দামের তুলনায় কম। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে চিনির দাম প্রতি কেজি ৩৯ টাকা, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৯৬ টাকা ও বিশ্ববাজারে ৫০ টাকা। এসব দাম বাংলাদেশের বাজারে চিনির বিদ্যমান দামের তুলনায় কম।

বাংলাদেশের চেয়ে মাথাপিছু আয় বেশি এমন ১৬ দেশের মানুষের খাদ্যের খরচ বিশ্লেষণ করেছে সিপিডি। যেখানে দেখা গেছে, কলম্বিয়ার মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাংলাদেশের মানুষের আড়াইগুন প্রায়। অথচ খাবারের জন্য কলম্বিয়ার চেয়ে বাংলাদেশের মানুষের ব্যয় বেশি। দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, ভিয়েতনামসহ অনেক দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেশি হলেও ব্যয় বেশি বাংলাদেশে। 

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য মূল্যস্ফিতিকে একটা সহনশীল পর্যায়ে না রাখতে পারা। এটি কিন্তু আমি বলব, সরকারের একটি বড় ব্যর্থতা। অর্থনীতি এখন উচ্চ প্রবৃদ্ধি ধরবার সময় নয়, অর্থনীতি এখন সামস্টিক স্থিতিশীলতা আনার সময়। ডলার ও ঋণের সুদহার বাড়ানো, কর বাড়িয়ে সরকারের আয় বাড়ানোর চেষ্টা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক পদক্ষেপ বলছে সিপিডি। তবে সরকার নিজের ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে বিপরীত অবস্থান নেয়ায় সুফল মিলছে না। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ। 

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম আরো বলেন, এই জিনিসগুলো আমরা যতটা বেসরকারি খাতকে মাথায় নিয়ে করি, ততটা সরকারি খাতকে মাথায় নিয়ে করি না। এরফলে দুর্ভোগটা দীর্ঘস্থায়ী হয়, লিকেজ থেকে যায় এবং সাধারণ মানুষ ভোগে বেশি। যে হারে মানুষ প্রবাসে কর্মে নিয়োজিত হচ্ছে, সে হারে রেমিট্যান্স বাড়ছে না। হুন্ডি বন্ধ করতে না পারা সরকারের বড় ব্যর্থতা। 

আরো পড়ুন:

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App