×

মধ্যপ্রাচ্য

গাজায় মৃত্যুফাঁদে ক্ষুধার্ত মানুষ, অনাহারে নিভছে শিশুদের প্রাণ

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৯:০১ এএম

গাজায় মৃত্যুফাঁদে ক্ষুধার্ত মানুষ, অনাহারে নিভছে শিশুদের প্রাণ

গাজায় ক্ষুধায় লুটিয়ে পড়ে পথে পথে প্রাণ হারাচ্ছে শিশুরা। ছবি : সংগৃহীত

পথেঘাটে লাশ আর ক্ষুধার্ত মানুষের হাহাকারে ফিলিস্তিনের গাজা যেন এক অন্তহীন দুঃস্বপ্নের উপত্যকা হয়ে উঠেছে। খাবারের সন্ধানে মানুষ বের হয়ে আর ফিরছে না, ক্ষুধায় লুটিয়ে পড়ছে পথে, প্রাণ হারাচ্ছে শিশুরা।

বুধবার (২৩ জুলাই) দ্য গার্ডিয়ান, আলজাজিরা ও এএফপির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে গাজার ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের বিবরণ।

ত্রাণের নামে মৃত্যুফাঁদ

দক্ষিণ-পশ্চিম গাজার আল-মাওয়াসি বাস্তুচ্যুত শিবিরে বাস করেন চার সন্তানের বাবা রায়েদ জামাল। ক্ষুধার্ত সন্তানের জন্য খাবার আনতে গিয়ে তাঁর তিন ছেলে শহীদ হয়েছেন বর্বর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে। অথচ বিতরণকেন্দ্র থেকে কিছুই পাননি জামাল, সেখানে ছিল কেবল দুটি খালি বাক্স।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানা যায়, মার্কিন-ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত বিতরণকেন্দ্রগুলো গাজাবাসীর যেন এক ‘মৃত্যুফাঁদ’ হয়ে ওঠেছে। এই বিতরণকেন্দ্রগুলোতে যেতে হয় উচ্ছেদের হুমকির মধ্যে, ট্যাঙ্কের গুলির মুখে। জামালের মতো হাজারো মানুষ দিনের পর দিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন এক মুঠো খাবারের আশায়।

‘মৃত্যুভয় আর নেই, ক্ষুধা আছে’

জামাল বলেন, গুলির মুখে প্রতিদিন পড়ি। আমাদের হৃদয় থেকে মৃত্যুভয় চলে গেছে। বাঁচার তাগিদে ক্ষুধার ভয়ই এখন বড়। ২৭ বছর বয়সী মাহমুদ আলারি পশ্চিম গাজা শহরের এক তাঁবুতে থাকেন। তিনিও ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রতিদিন ‘মৃত্যুফাঁদ’ পার হন। ওয়াদি গাজার ত্রাণকেন্দ্রে যেতে তাঁকে ইসরায়েলি সেনাদের নিয়ন্ত্রিত নেটজারিম করিডোর পেরোতে হয়। মাহমুদের ভাষায়, ত্রাণ আনতে গিয়ে আমরা প্রতিদিন মৃত্যুকে আলিঙ্গন করি।

১০১ জনের মৃত্যু, ৮৫ শিশু

আলজাজিরার তথ্য অনুযায়ী, গাজায় অনাহারে এ পর্যন্ত ১০১ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে ৮৫ জনই শিশু। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়াসহ ২৮টি দেশ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অনাহারে হত্যার অভিযোগ তুলেছে। ১০৯টি আন্তর্জাতিক মানবিক ও মানবাধিকার সংস্থা গাজায় কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ তৈরি করে মানুষ হত্যার বিরুদ্ধে অবিলম্বে মানবিক করিডোর স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছে।

ভয়াবহ সহিংসতা ও নিহতের সংখ্যা

গত মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় খাদ্য প্রবেশ বন্ধ রেখেছে। মে মাস থেকে বিতর্কিত জিএইচএফ কার্যক্রম শুরু হয়, যা বহুক্ষেত্রে ত্রাণের লোভ দেখিয়ে মানুষকে আটকে হত্যার কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ পর্যন্ত শুধু এই কৌশলে ১ হাজার ৫৪ জন নিহত হয়েছেন। বুধবার একদিনেই গাজায় ২১ জন নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে দক্ষিণ রাফার ত্রাণকেন্দ্রের কাছে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন দুজন। সবমিলিয়ে হামলায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৯ হাজার ১০৬ এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৪২ হাজার ৫১১ জন।

যুদ্ধবিরতির চেষ্টায় ইউরোপে ট্রাম্পের দূত

বিনাশ আর অনাহারের গহ্বর থেকে গাজাবাসীকে বাঁচাতে যুদ্ধবিরতির আলোচনা নতুন করে শুরু করতে চান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দূত স্টিভ উইটকফ এই সপ্তাহে ইতালির রোমে ইসরায়েলের কৌশলগতবিষয়ক মন্ত্রী রন ডার্মার ও কাতারের এক জ্যেষ্ঠ দূতের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আলোচনা সফল হলে উইটকফ মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে দোহায় যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আলোচনায় গাজায় মানবিক করিডোর স্থাপনই প্রধান লক্ষ্য।

গাজার সাংবাদিকদের উদ্ধারে আকুতি

ফ্রান্সের বার্তা সংস্থা এএফপি গাজায় কর্মরত তাদের ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকদের সরিয়ে নিতে ইসরায়েলের কাছে সহায়তা চেয়েছে। এএফপি এক বিবৃতিতে বলেছে, বিদেশি সাংবাদিকদের গাজায় প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকায় স্থানীয় সাংবাদিকরাই এখন বিশ্বকে গাজার ভয়াবহতা দেখাচ্ছেন। অথচ তারাই চরম অনাহার, দারিদ্র্য ও মৃত্যুর ঝুঁকিতে দিন কাটাচ্ছেন।

এএফপি জানিয়েছে, আমাদের সাংবাদিকরা সাহসিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এখন তাদের জীবন বাঁচাতে তাদের সরিয়ে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

নেতাকর্মীদের পরামর্শ ছাড়াই ৩৬ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে গণঅধিকার পরিষদ

নেতাকর্মীদের পরামর্শ ছাড়াই ৩৬ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে গণঅধিকার পরিষদ

মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনা: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩

মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনা: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ: নিহত ১৪, ঘরছাড়া লক্ষাধিক মানুষ

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ: নিহত ১৪, ঘরছাড়া লক্ষাধিক মানুষ

বিচার চেয়ে কাঁদছে সোহাগের পরিবার

বিচার চেয়ে কাঁদছে সোহাগের পরিবার

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App