কাতারে অবস্থিত মার্কিন বিমান ঘাঁটি আল-উদেইদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর আগে দেশটিকে অবহিত করেছিল ইরান। তিনজন ইরানি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, সম্ভাব্য প্রাণহানি কমানোর জন্য কাতারের কর্মকর্তাদের এ হামলার তথ্য আগেই জানিয়ে দিয়েছিল তেহরান। 

প্রতিবেদন বলা হয়, ইরান চেয়েছিল পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন হামলার প্রতিশোধ নিতে, একইসঙ্গে পরিস্থিতি যাতে সহজে শান্ত করা যায়- সেই নিশ্চয়তাও রাখতে চেয়েছিল।  

এর আগে ২০২০ সালে কাসেম সোলাইমানির হত্যার জবাবে ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আগেও ইরাক সরকারকে অবহিত করেছিল ইরান। 

কাতার ইরানের এই হামলাকে তাদের সার্বভৌমত্বের নির্লজ্জ লঙ্ঘন হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে।

আরো পড়ুন : ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়নি: ইরান

এর আগে কাতারের রাজধানী দোহার আকাশে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আল-উদেইদ ঘাঁটির দিকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। 

একইসঙ্গে ইরাকেও একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপেরও খবর পাওয়া গেছে।

শনিবার দিনগত রাতে ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র যদি সরাসরি হামলা চালায়, তবে তার জবাব কঠিন হবে।

এ পর্যন্ত মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ কিংবা কাতার সরকার আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে ইরান হামলার কথা স্বীকার করেছে।

আল-উদেইদ ঘাঁটিকে ঘিরে উচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতা ইতোমধ্যেই আরোপ করা হয়েছিল। এটি মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ আরো গভীর এবং যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে জড়ানোর ইঙ্গিত দিতে পারে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এক বার্তায় স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ইরান কাউকে আঘাত করেনি, তবে কোনো ধরনের পরিস্থিতিতেই অন্যের আগ্রাসন মেনে নেবে না।

তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বার্তায় বলা হয়, ‘আমরা কারো আগ্রাসনের কাছে মাথা নত করব না—এটাই ইরানি জাতির যুক্তি।’

খামেনির এই মন্তব্য এমন সময় এলো যখন কাতারে মার্কিন বিমানঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে এবং আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া একের পর এক আসছে। খামেনির এই বক্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে, ইরান আগ্রাসনের জবাবে প্রতিরোধ চালিয়ে যাবে। 

এর আগে কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি আল-উদেইদ লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে আইআরজিসি। একইসঙ্গে ইরাকেও একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপেরও খবর পাওয়া গেছে।