গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে গণমাধ্যমকে স্বাধীন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন। 

প্রশ্ন তোলার উপযুক্ত সময় এখন: শফিকুল আলম  

প্রেস সচিব বলেন, গণতান্ত্রিক ট্রানজিশনের এই মুহূর্তে প্রশ্ন করার সঠিক সময়। এখন প্রশ্ন করতে পারেন, প্রশ্ন করার সঠিক পরিবেশ আছে কিনা। গণমাধ্যমের সেই স্বাধীনতা আছে কিনা প্রশ্ন করার? আমি আমার সরকারের পক্ষ থেকে বলতে পারি, গত পাঁচ মাস ধরেই আমরা বলছি, প্রশ্ন করার এখনই সময়। ক্ষমতাধরদের প্রশ্ন করে দায়বদ্ধ করার এখনই সেরা সময়।  

তিনি আরো বলেন, গত পাঁচ মাসে আমাদের নিরাপত্তা এজেন্সি, প্রশাসন, কিংবা কোনো আইন প্রয়োগ করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় কোনো প্রকার বাধা দেয়া হয়নি। যদি কারও অভিযোগ থাকে, আমাদের জানান। আমরা সেটি নিয়ে কাজ করবো। গণমাধ্যম এখন এমন স্বাধীনতা উপভোগ করছে, যা আগে কল্পনা করা যেত না। এখন আপনি আমার, প্রধান উপদেষ্টার, এমনকি উপদেষ্টাদের সমালোচনাও করতে পারেন। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে স্বাধীন গণমাধ্যম অপরিহার্য।  

উন্নয়ন ও গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার আহ্বান  

শফিকুল আলম বলেন, আমরা এমন একটি সময়ে আছি, যখন আমাদের উন্নয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। ছাত্র-জনতা থেকে শুরু করে সমাজের সব স্তরের মানুষ এখন প্রশ্ন করছে—আমরা কি সঠিক পথে আছি? উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে গণতন্ত্রকে স্যাক্রিফাইস করেছি কিনা? গণতন্ত্র ছাড়া এই উন্নয়ন কতটা স্থায়ী হবে? শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এসব প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, যারা একসময় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও আন্দোলনে নেমেছিল।  

মানবাধিকার ও পরিবেশ সংরক্ষণে নজর দেয়ার তাগিদ  

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পরিবেশবিধি মেনে পরিচালিত হয়েছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলুন। এসব প্রকল্পে কর্মরতদের মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে কিনা, প্রকল্প এলাকার স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে কিনা—এগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উন্নয়ন বড় বিষয়, তাই সঠিক প্রশ্ন তোলাও জরুরি।  

সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ  

অনুষ্ঠানে ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া ফোরামের লোগো উন্মোচন করা হয়। ফোরামটি সাংবাদিক ও উন্নয়নকর্মীদের মধ্যে একটি সংযোগ স্থাপন করবে এবং সাংবাদিকদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে।  

উল্লেখ্য, ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া ফোরামের মাধ্যমে গণমাধ্যম ও উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় আরও কার্যকর ভূমিকা রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন সংশ্লিষ্টরা।