যে কারণে প্রাপ্তবয়স্কদের পছন্দের শীর্ষে জ্যালিক্যাট খেলনা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪০ এএম

নিজের ২৩৫টি জ্যালিক্যাট খেলনার সঙ্গে ক্লো ডে। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
জেলিক্যাট নামের একটি ব্রিটিশ কোম্পানি গত ২৫ বছর ধরে খেলনা তৈরি করে আসছে। তারা টেডি বিয়ার থেকে ডিম, বার্গারসহ নানা মজার বস্তু দিয়ে খেলনা তৈরি করে কার্যত এ জগতে একটি বিপ্লব ঘটিয়েছে। কিন্তু এই খেলনাগুলো কীভাবে এত জনপ্রিয় হয়ে উঠলো? কয়েকজন ভক্ত তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, যারা এই খেলনার প্রতি তাদের ভালোবাসা ও আকর্ষণের কথা জানিয়েছেন।
ক্লো ডে’র গল্প
সোশ্যাল মিডিয়ায় মজার ডিম দেখে শুরু। ২৫ বছর বয়সী ক্লো ডে প্রথমবার জেলিক্যাটের একটি হাসিমুখী প্লাশি ডিম দেখেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এটি সাধারণ কোনো ডিম নয়, একটি প্লাশি ডিম যার সাদা অংশ থেকে বের হয়ে এসেছে ছোট ছোট বাদামি রঙের পা এবং হলুদ কুসুমের উপরে একটি মিষ্টি হাসি। আমি বারবার এই ডিমটি দেখতে পাচ্ছিলাম, বললেন ডে। শেষ পর্যন্ত, আমি সেটি কিনে ফেললাম। দ্য গার্ডিয়ানকে জানান ক্লো ডে।
২০২৩ সালের জুনে প্রথম জেলিক্যাট কেনার পর থেকে তার সংগ্রহে এখন রয়েছে অন্তত ২৫২টি খেলনা। সম্প্রতি তিনি ও তার প্রেমিক একটি বাড়ি কিনেছেন, যেখানে একটি সম্পূর্ণ কক্ষ জেলিক্যাটগুলোর জন্য বরাদ্দ করা হবে।
ডে বলেন, আমি ছোটবেলায় বিভিন্ন জিনিস সংগ্রহ করতাম, কিন্তু জেলিক্যাটই একমাত্র যেটা এখনো আমার সাথে রয়েছে।
অ্যান্ড্রু এলিয়টের অভিজ্ঞতা
আমি এগুলো কিনতেই চাই, জানালেন ২৫ বছর বয়সী অ্যান্ড্রু এলিয়ট। তিনিও জেলিক্যাটের একনিষ্ট ভক্ত। এন্ড্রু জানান, দোকানের জানালায় যদি জেলিক্যাট দেখি, তাহলে সেটি না কিনে বের হওয়া খুব কঠিন। আমার সংগ্রহে এখন ৪৩টি জেলিক্যাট আছে।
তার প্রথম জেলিক্যাট ছিল একটি গাধা, যা তার বান্ধবী উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। এলিয়ট বলেন, এই গাধার প্রতি আমার বিশেষ আবেগ রয়েছে। তিনি আরো জানান, জেলিক্যাট শুধু পশু নয়, ঘরের নানা জিনিসপত্রের আদলে তৈরি হয়। যেমন, তিনি মাঝে মাঝে ফলের বাটিতে জেলিক্যাটের ফল রাখেন, যা তাকে আনন্দ দেয়।
নেল রিচার্ডসের সংগ্রহ
ডরসেটের বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সী নেল রিচার্ডস প্রথমদিকে জ্যালিক্যট সংগ্রহ শুরু করেন মানসিক শান্তির জন্য। তার ধারনা জেলিক্যাট উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করে। তার সংগ্রহ করা প্রথম জেলিক্যাট ছিল বারখোলোমিউ বিয়ার। এটি সবসময় তার বিছানায় থাকে। এই মুহূর্তে রিচার্ডসের সংগ্রহে অন্তত ২৩টি জেলিক্যাট রয়েছে।
রিচার্ডস বলেন, যখন আমি উদ্বিগ্ন হই, তখন বিছানায় বসে জেলিক্যাটগুলোকে স্পর্শ করি। এটা আমাকে শান্ত হতে সহায়তা করে। নিজের সংগ্রহের থাকা প্রতিটি খেলনা তাকে মানসিকভাবে স্বস্তি দেয় বলে জানিয়েছেন নেল রিচার্ডস।
শুধু ছোটদের কাছে নয়, বড়দের কাছেও দারুন জনপ্রিয় এই জেলিক্যাটের খেলনাগুলো। সাইকোথেরাপিস্ট সুজি মাস্টারসন বলেন, জেলিক্যাটের খেলনাগুলো আমাদের সেই শৈশবের নিরাপদ ও আনন্দময় সময়ের স্মৃতি ফিরিয়ে আনে। যেখানে হাসিমুখ ছিল আশেপাশে, আনন্দে ছিলাম আমরা।
টিকটকে জেলিক্যাটের সম্রাজ্য
টিকটকে হ্যাসট্যাগ জেলিক্যাট লেখা লাখ লাখ পোস্ট রয়েছে। এসব পোস্ট প্রমাণ করে এ খেলনা বড়দের মধ্যেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ক্লো ডে বলেন, টিকটকে বিভিন্ন বয়সের মানুষকে আমরা জিলিক্যাট দিয়ে কনটেন্ট তৈরি করতে দেখছি। এটা দেখে মনে হচ্ছে খেলনাটি শুধু বাচ্চাদের জন্য নয় বরং বরং প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্যও।
অ্যান্ড্রু এলিয়ট জানান, এগুলো এমন এক জিনিস যা আপনাকে শুধু আনন্দই দেয়। আমি এগুলোর সঙ্গে আমার সময় ভাগ করে নেই। আমাকে আনন্দ দেয় এই খেলনাগুলো।