জুলাই গণহত্যা
শেখ হাসিনা ও দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ১২:৪২ পিএম

এ আদেশের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচারকাজ শুরু হলো। ছবি : সংগৃহীত
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ফলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচারকাজ শুরু হলো।
এদিন সকালে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন অভিযোগ গঠনের শুনানিতে পলাতক দুই আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে অব্যাহতির আবেদন করেন। তবে আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়।
মামলার অপর আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে এদিন প্রিজন ভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
আরো পড়ুন : নতুন মামলায় আনিসুল, সালমান, আমুসহ গ্রেফতার ৯
গত ১ জুলাই গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ গঠন শুনানির তারিখ ধার্য করেছিল ট্রাইব্যুনাল। সেই শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
অন্যদিকে পলাতক দুই আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে ছিলেন মো. আমির হোসেন। আর গ্রেপ্তারকৃত সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে দেশে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থান ও সহিংসতার সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতনসহ নানা মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এই মামলা হয়। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ওইসব অপরাধ সংঘটিত হয়।
প্রসিকিউশন দাবি করেছে, ওই সময় সরকারি বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎকালীন শীর্ষ কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে হত্যা ও গুম করা হয়। সেই প্রেক্ষিতেই শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে এ মামলায় আসামি করা হয়।
মামলার তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদেশ অনুযায়ী, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ফলে এখন শুরু হবে সাক্ষ্যগ্রহণ ও প্রমাণ উপস্থাপন। প্রসিকিউশনকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাক্ষ্য ও প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে। এরপর আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক তুলে ধরবে। প্রয়োজনীয় সকল সাক্ষী ও প্রমাণ দ্রুত উপস্থাপনের মাধ্যমে বিচার দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ট্রাইব্যুনালের এক সূত্র।